মা কালীর পায়ের তলায় মহাদেব শুয়েছিলেন বলেই, আজ আমরা সবাই বেঁচে আছি!

1015

কেন দুর্গাপুজোর পর কেন কালী পুজো হয়? এনিয়ে হিন্দুশাস্ত্রে অনেক কথা থাকলেও এই পৌরাণিক কথাটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ । অর্থাৎ পৌরানিক কথা অনুযায়ী, মহিষাসুরকে নিধনের পর বেঁচে ছিলেন রক্তবীজ নামে এক অসুর । মূলত, ব্রহ্মার বরে অপরাজেয় থাকেন তিনি । এই অবস্থায় দুর্গার ভীষণ ক্রোধে তাঁর দুই ভ্রূ-এর মাঝখান থেকে জন্ম নেন কালী ।নগ্নিকা কালীর ভয়াল দৃষ্টিতেই নিহত হন বহু অসুর । এরপর দেবীর চিৎকারে প্রাণহানি হয় আরও অনেক অসুরের । রক্তবর্ণ লকলকে জিভ বের করে কালী গ্রাস করে নেন হাতি ও ঘোড়ায় সওয়ার অসুর বাহিনীকে। তারপরেও টিকে থাকেন রক্তবীজ । কারন ব্রহ্মার প্রাপ্ত বর অনুযায়ী রক্তবীজ তাঁর একফোঁটা রক্ত থেকে জন্ম দিচ্ছিল আরও হাজার রক্তবীজ অর্থাৎ তাঁর (রক্তবীজ) একফোঁটা রক্ত ভূমিতে পড়লেই আবির্ভূত হচ্ছিল বাদবাকি অসুরেরা। এই অবস্থায় দেবী কালী তাঁকে অস্ত্রে বিদ্ধ করে তাঁর সব রক্ত পান করতে থাকেন ।

রক্তবীজের একফোঁটা রক্তও যাতে ভূমিতে না পড়ে রক্তবীজের দেহ শূন্যে তুলে নেন কালী। আকণ্ঠ রক্ত পান করে বিজয়নৃত্য শুরু করেন কালী । নিহত অসুরদের হাত দিয়ে তিনি কোমরবন্ধনী এবং মাথা দিয়ে মালিকা বানিয়ে পরিধান করেন । কালীর উন্মাদিনী নাচ দেখে প্রমাদ গোনেন দেবতারা | কারণ ওই নাচে আসন্ন হচ্ছিল সৃষ্টির লয় | পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে দেবতারা শিবের শরণাপন্ন হন । শিবের একাধিক মৌখিক অনুরোধ শুনতে পাননি কালী । কারণ তখন তিনি পাগলের মতো নেচে চলেছেন । আর কোনও উপায় না দেখে নৃত্যরতা কালীর পায়ের তলায় নিজেই শুয়ে পড়লেন মহাদেব । কথায় আছে এরপরেই জ্ঞান ফেরে কালীর। থেমে যায় নাচ । পায়ের নীচে স্বামীকে দেখে লজ্জায় জিভ কাটেন তিনি । এই পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বন করেই যুগ যুগ ধরে পূজিত হয়ে আসছেন মা ।