যাযাবর হয়েও ভারতবর্ষে যেভাবে মুঘল সাম্রাজ্যের পুনঃসূচনা করেছিলেন হুমায়ুন?

গতপর্বেঃ  বাবরের হাত ধরে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা… 

বাবর তার শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্যের সীমানা কাবুল থেকে বগুড়া, গোয়ালিয়র থেকে বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত করলেও সে সময় ভারতবর্ষে শাসনতান্ত্রিক জটিলতা এবং বিদ্রোহ সহ নানা ধরনের অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল এরই প্রেক্ষাপটে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের শাসনামলেও বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ১৫৩৮ সালে চৌসার যুদ্ধের 

তৎকালীন দুর্ধর্ষ নেতা শেরশাহের কাছে পরাজিত হয়। চৌসার যুদ্ধে পরাজয়ের পর হুমায়ুন শেরশাহের সঙ্গে চূড়ান্ত শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার প্রস্ত্ততি নিতে শুরু করেন। কিন্তু ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে কনৌজের যুদ্ধেও পরাজিত হওয়ার কারণে একদিকে হুমায়ুনকে সিংহাসন ত্যাগ করতে হয় এবং অন্যদিকে আফগান সালতানাত পুনরুদ্ধারে শেরশাহ সমর্থ হন। কনৌজের যুদ্ধের পর হুমায়ুন প্রায় ১৫ বছর গৃহহীন অবস্থায় যাযাবরের মতো জীবন যাপন করেন। ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে অমরকোটে হুমায়ুনের পুত্র  আকবরের জন্ম হয়। এরপর হুমায়ুন দ্রুত পারস্যের দিকে অগ্রসর হন। পারস্যের শাহ তামাস্প হুমায়ুনকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন এবং শত্রু মনোভাবাপন্ন ভাইদের হাত থেকে তাঁকে কাবুল ও কান্দাহার পুনরুদ্ধারে সাহায্য করেন। হুমায়ুন সরহিন্দে সিকান্দার শূর-এর নেতৃত্বাধীন আফগান বাহিনীকে পরাজিত করেন এবং  ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে দিলি­ ও আগ্রা পুনর্দখল করেন। কিন্তু নিজের সাম্রাজ্যসীমা পুনরায় বৃদ্ধি এবং এটিকে সংহত করার মতো দীর্ঘ সময় তিনি বেঁচে থাকেননি। ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জানুয়ারি দিল্লিতে গ্রন্থাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে হুমায়ুনের মৃত্যু ঘটে। তাঁর মৃত্যুর পর মুঘল সাম্রাজ্য অলংকৃত করেন তার ছেলে সম্রাট আকবর।