বিশ্ব জননী

বিশ্ব জননীকে জন্মদিনের শ্রদ্ধা।

আজ রাখিবন্ধন, রাখি পূর্নিমার পূর্ণ তিথিতে আমরা অনেকেই ভুলতে বসেছি এক মহান মানবীর কথা। তিনি বিশ্বের মা, মাদার টেরিজা। ভগবান রূপে, নিজের মায়ের মতো করে তিনইই দুঃস্থদের সেবা করেছিলেন। আজ ২৬শে আগস্ট আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয়া মাদারের জন্মদিন।

জন্মসূত্রে তিনি রোমান ক্যাথলিক হলেও জীবনের বেশীরভাগ সময় তিনি কাটিয়েছিলেন ভারতে। নিজের পিতা-মাতার সর্ব কনিষ্ঠা সন্তান তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই পিতাকে হারান তিনি। ১২ বছর বয়স থেকেই নিজের মনকে ধার্মিক আরাধনায় নিবদ্ধ করেছিলেন তিনি। ১৯২৯ সালস ভারতের দার্জিলিংয়ে এসে তিনি তাঁর শিক্ষানবিশি শুরু করেন। সেখানে থাকাকালীন বাংলা ভাষা শেখেন তিনি। ‘টেরিজা’ উপাধি লাভ করেনন সেখান থেকেই। পরে ১৯৩৭ সালে পূর্ব কলকাতার লরেটো কনভেন্ট স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। কলকাতার দরিদ্র মানুষদের দেখে মাদারের মনের অসীম দয়া ও মমত্ববোধ জাগ্রত হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ সাল থেকে শিক্ষকতার কাজ ছেড়ে দিয়ে তিনি পুরোপুরি দুঃস্থ-ক্ষুধার্ত মানুষদের সেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে দেন। বহু মানুষ তাঁর সেবায় সুস্থ হয়ে ওঠে। স্নেহের স্পর্শে রোগ নির্মম করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। বহু অনাথ শিশুকে নিজের আশ্রমে ঠাই দিয়েছিলেন তিনি এবং তাঁদের মায়ের মতো যত্ন করে মানুষ করেছিলেন। কুষ্ঠ রোগীদের সেবা, মেডিকেলের ওষুধপত্রের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি।

তাঁর অসাধারণ মমত্ববোধের জন্য ১৯৭৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। দরিদ্রদের সেবাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেওয়া মাদার আমাদের হৃদয়ে চিরকাল বিরাজমান।

হৃদরোগের অসুখে বেশ কিছুদিন ভুগতে ভুগতে অবশেষে ১৯৯৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর প্রাণত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর দিনে সারা কলকাতা জুড়ে জনসমাগম হয়, শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি মারা গেলেও আজও তাঁর নামঙ্কিত মিশনারি গুলি দুঃস্থদের সেবার কাজে নিয়োজিত।