রেনবো বধ হলেও চিন্তার ঘনঘটা লাল-হলুদ শিবিরে

এই জয়ের ফলে গোলপার্থক্যে মোহনবাগানকে টপকে লিগ তালিকার শীর্ষে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল।

ইস্টবেঙ্গল – ১ (চুলোভা – পেনাল্টি)

নিউ ব্যারাকপুর রেনবো – ০

এ যেন দুই অর্ধে দুইরকম ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধে যতটা প্রাণবন্ত ফুটবল, দ্বিতীয়ার্ধে ততটাই বিরক্তিকর খেলা। রেনবোকে হারালেও ইস্টবেঙ্গল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক যে চিন্তায় থাকবে তা বলাই বাহুল্য। ঠিক ৭ দিন বাদেই ডার্বি ম্যাচ। টিডি সুভাষ থেকে কোচ বাস্তব রায় কেউই চাইবেন না দ্বিতীয়ার্ধের হতশ্রী ফুটবলের ছায়াও ম্যাচে পড়ুক।

প্রথমার্ধ থেকে ইস্টবেঙ্গল যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিল। আল আমনাকে কড়া মার্কিংয়ে রেখেছিল রেনবোর খেলোয়াড়রা। কিন্তু মার্কিং সত্ত্বেও আমনা ছিটকে বেরিয়ে আক্রমণে সাহায্য করছিলেন। ১৭ ও ২০ মিনিটে দুটি ভাল গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন জবি জাস্টিন। দুবারের প্রয়াসেই হেডটিকে গোলে রাখতে পারেননি এই কেরালার স্ট্রাইকার। ২৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। সুরাবুদ্দিন মল্লিক দ্রুত বেরিয়ে গেলে তাকে বক্সের মধ্যে রেনবোর সৌরভ। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি লালরাম চুলোভা। গোল করার পরে ইস্টবেঙ্গল নিজেদের গতি তুলনামূলক কমিয়ে আনে, অন্যদিকে তড়িৎ ঘোষের রেনবো আপ্রাণ চেষ্টা করেছে যাতে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ বিপদজনক না হয়ে উঠতে পারে।

গোলের পর চুলোভা। সূত্র সাধনা নিউজ

প্রথমার্ধে বেশ ভালো ফুটবল খেলা সত্ত্বেও দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল কেমন যেন ঝিমিয়ে গেল। তুলনায় রেনবো মাঝেমধ্যে আক্রমণ করতে থাকে। একসময়ে ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া পেন অর্জি এবং ময়দানের পোড়খাওয়া বিদেশী জোয়েল সানডে বেশ কয়েকবার ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। অন্যদিকে মিসপাসের বহর দেখা যায় ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে। একা আল আমনাই যা একটু বুদ্ধিমত্তার খেলা খেলছিলেন, বাকি কেউই সেরকম সাপোর্ট করতে পারেননি। জবি আজ একের পর এক গোল মিস করেছেন, যা মোটেও ভাল ইঙ্গিত নয় ইস্টবেঙ্গলের জন্য। তবে এই ম্যাচেও তারা যে ক্লিন শিট ও জয় আদায় করতে পেরেছেন এটিই একমাত্র প্রাপ্তির বিষয়।

মিশ্র এই ফুটবলে ভালো লাগার মধ্যে রেনবোর কিছু বাঙালি ফুটবলার, যারা ইস্টবেঙ্গলের মত হেভিওয়েট দলের বিরুদ্ধে কার্যত সমানে সমানে লড়ে যাচ্ছিলেন। গোলরক্ষক দিব্যেন্দু থেকে সুজয়, সুরজ এরা সকলেই বেশ ভালো ফুটবল খেলেছেন। আর ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে একজনই স্টার এই ম্যাচে, তিনি হলেন সিরিয়ান মিডফিল্ডার মাহমুদ আল আমনা। ৩৭ বছর বয়সে কলকাতা ময়দানের কর্দমাক্ত মাঠে গোটা ৯০ মিনিটে আক্রমণ ও মাঝমাঠ দুইই সামলাচ্ছিলেন তিনি। এই জয়ের ফলে গোলপার্থক্যে মোহনবাগানকে টপকে লিগ তালিকার শীর্ষে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল।

ঝিমিয়ে পড়া দ্বিতীয়ার্ধেও যেটা সবথেকে বেশি নজর কাড়ল তা হল লাল-হলুদ সমর্থকদের একটানা উল্লাস ও জয়ধ্বনি, যা এনার্জি ড্রিঙ্কের মত কাজ করে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে।