নারী দিবসে আমরা মেয়েরা

দীপাঞ্জনা বসু মজুমদারঃ চিফ অপরেশন এডিটর – আজ ৮ মার্চ, আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মত ক্যালেন্ডারের একটি দিন। তবে বেশ কিছু বছর হল এই দিনটির গায়েও বিশষত্বের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছ।আজ বিশ্ব নারী দিবস। যা আরো একবার নারী চেতনা কে জাগ্রত করার দিন।  মাতা, ভার্যা,সহোদরা,দত্তা যে সম্পর্কই থাকুকনা কেন জগত সংসারের ধারক এই মহিলারা। তাই সে জগদ্ধাত্রী।নতুন প্রজন্মের কাছে এটি একটি বিশেষ দিন। অন্যান্য বিশেষ দিনের মত এই দিনটিতেও তাঁরা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কিন্তু আমাদের মা ঠাকুরমা বা আরো একটু পিছিয়ে গেলে নারী স্বাধীনতাই সেখানে বড় প্রশ্ন। একুশেও আমরা মেয়েরা সত্যি স্বাধীন? সত্যি কি আমরা নিজেদের সেই দৃঢ় জায়গা ধরে রাখতে পারি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায়। জন্মের আগে থেকে যেখানে নারী পুরুষের ভেদাভেদ সেখানে এক দিনের গালভরা সম্ভাষণ নাই বা হল। যে দেশে নারী পণ্য, যে দেশে কণ্যাভ্রূুণ হত্যার মত পাপ অহরহ, যে দেশে মুড়ি মুড়কিড় মত ধর্ষণের ঘটনা, যে দেশে মেহেন্দির রং ফিকে হওয়ার আগেই পণের শিকার মেয়েরা সেখানে আমরা  বিশ্বনারী দিবসের কথা বলছি। সত্যি বড় হাস্যকর বিষয়। কণ্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বছর না ঘুরতে তার ওই কচি মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হল এ সংসারের মাথা দাদু বা বাবা, কেন বলা হয়না এ সংসারের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন দিদা বা মা। আস পাস থেকে আমরা মেয়েরাই রে রে করে উঠে বলব সে আবার হয়নাকি? এই নিয়ে বিরোধিতা করলে জন্মদাত্রী নিজেই বলবেন এটাই নাকি সংসারের নিয়ম। বিদ্যোত্জনরা বলেন নারী মুক্তি , নারী স্বাধীনতার কথা, মেয়েরা পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোচ্ছেন।আপাত দৃষ্টিতে মেয়েরা সত্যি এগোচ্ছেন। মেয়েরা এখন দেশ চালাচ্ছেন, মেয়ে পাড়ি দিচ্ছেন ভিন গ্রহে, মেয়েরা এখন তুষারগিরি অতিক্রম করছেন অনায়াসে ,অনেক কর্মক্ষেত্রে মেয়েরা এখন বস। তবে এখানেই শেষ। মেয়েদের এই এগিয়ে আসার ঘটনা মুষ্টিমেয় পুরুষছাড়া অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। তাইতো ঘরে ঘরে অশান্তি, দেশ জুড়ে নারী অত্যাচারের ঘটনা। বাবার শাসনে বড় হওয়া ছোট থেকে, বিয়ে পর স্বামীর অধীনতা, আর বার্ধক্যে ছেলে বশ্যতা স্বীকার। একুশেও সংসারের চালকের আসনে এখনো পুরুষ। তবে শুধু চালকের ভরসা নয় ধারকের উষ্ণতাও পাক সংসার। নারী পাক তার প্রাপ্য সন্মান।আর শুধু বইয়ে পড়া স্বাধীনতার বুলি নয় নিজের যোগ্যতায় নিজের জায়গা করে নিক মেয়েরা। আজ বিশ্ব নারী দিবসে এই হোক নারীর অঙ্গীকার।