অশনি সংকেত! পৃথিবী ধ্বংসকারী ৩টি গ্রহাণু নজরে এল বিজ্ঞানীদের

পৃথিবীর জন্য অশনি সংকেত। পৃথিবীকে ধ্বংস করতে পারে এমন গ্রহাণু কথা জানালেন বিজ্ঞানীরা। ওই গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে ২০২২ এপি ৭। ‘দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিজ্ঞানীদের একটি দল তিনটি বৃহৎ গ্রহাণু দেখতে পেয়েছেন। সূর্যালোকের জেরে অতি শক্তিশালী টেলিস্কোপেও এতোদিন দেখা যায়নি ওই গ্রহাণুগুলিকে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, এর মধ্যে একটি গ্রহাণু সবচেয়ে বড়। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছে ২০২২ এপি ৭। এটি প্রায় ১.৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। অর্থাৎ প্রায় ০.৯ মাইল। এটিই পৃথিবীর ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তারা। চিলির ভিক্টর এম ব্ল্যাঙ্কো টেলিস্কোপ, অর্থাৎ একটি ডার্ক এনার্জি ক্যামেরা ব্যহার করে গ্রহাণুগুলির উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে র্বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের আরও দাবি, ২০২২ এপি ৭ ছাড়াও পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আছে আরও ২ টি গ্রহাণু। কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্সের আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেট ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী স্কট শেপার্ড বলেছেন, পৃথিবীর কাছাকাছি দু’টি গ্রহাণু প্রায় এক কিলোমিটার প্রস্থ বিস্তৃত। এটা এমন একটি একটি আকার যা সম্ভবত প্ল্যানেট কিলার হতে পারে বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানী শেপার্ড। তবে, খুব তাড়াতাড়ি ওই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের আশঙ্কা খুব কম বলে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন ওই জ্যোতির্বিজ্ঞানী। ওই বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ২০২২ এপি ৭ গ্রহাণুটি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় নেয়। আর পৃথিবীর নিকটতম বিন্দু থেকে কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেই কারণে বর্তমানে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি বেশ কম বলে জানিয়েছেন তিনি।

২০২২ এপি ৭-কে পৃথিবীর জন্য সম্ভাব্য বিপজন্নক গ্রহাণু হিসেবে আবিস্কৃত হয়েছে বলে জানিয়েছে আরও একটি মার্কিন গবেষণা সংস্থাও। একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের পর তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরীক্ষামূলকভাবে গতিপথ পরিবর্তন করার জন্য একটি গ্রহাণুর সঙ্গে একটি মহাকাশযানের সংঘর্ষ ঘটিয়েছিল। সেই পরীক্ষায় সফল হয় তারা। সংঘর্ষে গ্রহাণুটির কক্ষপথের পরিবর্তন হয়েছিল। আগামী দিনে পৃথিবীর কাছে বিপজ্জনক গ্রহাণুগুলির কক্ষপথ পরিবর্তনের জন্য এটা হাতিয়ার হতে পারে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

এদিকে, বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাছাকাছি অন্তত ৩০ হাজার গ্রহাণুর আবিস্কার করেছেন। তাদের নাম দেওয়া হয়েছে নিয়ার আর্থ অবজেক্ট (এনইও)। যদিও, এই গ্রহাণুগুলি থেকে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।