যুবনেতা থেকে জননেতা, আগামী বাংলার ভবিষ্যৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

156

সৌরভ দওঃ  রাজনীতি তাঁর রক্তে থাকলেও কখনও জননেতা হয়ে উঠতে পারেননি রাহুল গান্ধী। যতবার দলের ব্যাটন ধরেছেন ততবার মুখ থুবড়ে পড়েছেন। তবে বাংলার দামাল ছেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খুব অল্পদিনের মধ্যেই যুবনেতা থেকে জননেতা হয়ে উঠেছেন। কেন্দ্র যতবার তাঁকে দমানোর চেষ্টা করেছে ততবারই তিনি উঠে দাঁড়িয়েছে। আর এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই আগামী বাংলার ভবিষ্যৎ হতে চলেছে তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা হারে হারে টের পাচ্ছেন। কারন মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মত নেতারা দল ত্যাগ করার পর তৃনমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড এখন তিনিই। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসমক্ষে একথা এখনও স্বীকার করেন নি। কিন্তু সূত্র বলছে আগামীকাল ৫ জুন তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে এই যুব নেতার সর্বভারতীয় অভিষেক ঘটতে চলেছে। অর্থাৎ অভিষেকের “অভিষেক’।

তবে ওপরের অংশটি পড়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগে উঠেছে, যে আমরা সংবাদমাধ্যম কিসের ওপর ভিত্তি করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুবনেতা থেকে জননেতার আখ্যা দিচ্ছি? প্রথমেই বলা যাক, এবারের নির্বাচনে ভাঙা পা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতটা রাজ্য ঘুড়েছেন, তার চেয়ে বেশি অভিষেকের মুখ দেখা গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। কারন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচনে লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজ্যও সামলাতে হয়েছে সমানভাবে, তাই মমতার নির্বাচনী প্রচারের অপূরণীয় কাজটি পূরণ করে মানুষের মনে মমতার মতন জায়গা করে নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

দ্বিতীয়ত, এবারের লড়াইয়ে আমারা দেখেছি হেভিওয়েট নেতাদের অন্যদলের যোগদানের চিত্র। যারফলে তৃণমূল প্রায় হেভিওয়েট শূন্য হয়ে পরে। পাশাপাশি নন্দিগ্রামে মনোনয়ন পত্র জমা দেবার পর নেত্রীর পা ভাঙার খবর, এবং বিজেপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে। সেখান থেকে ভয় না পেয়ে দলের প্রচার নিখুত ভাবে করে যাওয়া দৃশ্যটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।

তৃতীয়ত, বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে যে সমস্ত ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করেছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘তোলাবাজ ভাইপো’। কিন্তু অভিষেক এনিয়ে আগাগোড়া ছিলেন শান্ত থাকতে দেখা গেছে। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, হিম্মত থাকলে তাঁর নাম দিয়ে আক্রমণ করুক নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ-শুভেন্দু অধিকারীরা। শেষমেশ জনগণের প্রতি আস্থা রেখে আপন মনে খেলা জিতেছেন তিনি।

চতুর্থত, সম্প্রতি আমারা দেখতে পাচ্ছি যশ বিধস্ত এলাকায় মানুষ সাথে ভালোভাবেই মিশে গিয়েছেন তিনি। ঠিক যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের মধ্যে মিশে যান। যেমন অসহায় মানুষদের কোনও কিছুর যেন ঘাটতি না হয়, কী ভাবে পাওয়া যাবে সরকারি ক্ষতিপূরণ, ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য কথা হল, তৃতীয়বারের মত মমতার জয়লাভের পর অনেকেই চাইছেন বাংলার নেত্রী যাতে এবার দিল্লির মসনদে যায়। এই নিয়ে ইতিমধ্যে টুইটারে ট্রেন্ডিং শুরু হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে #BengaliPrimeMinister । তাই বস্তুত মমতা যত দিল্লির রাজনীতিতে ঝুঁকবেন, ততই রাজ্যে দায়িত্ব বাড়বে অভিষেকের কাঁধে।