লোকসভা বড়সড় ধাক্কা খাবার পর শিক্ষক নিয়োগের সিধান্ত নিল রাজ্যে সরকার

102

আজ নবান্নে সব দফতরের মন্ত্রী সচিবদের সঙ্গে পর্যালোচনায় বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । জানা গিয়েছে এই বৈঠকে সকল দফতরের মন্ত্রীদের কাছে কাজের খতিয়ান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । অর্থাৎ কোন দফতরের কাজ কতখানি এগিয়েছে । বরাদ্দ অর্থের কত টাকা খরচ হয়েছে এই সমস্ত বিষয়েই বিশদে রিপোর্ট নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । সাথেই মমতার নির্দেশ, মন্ত্রীরা ৪ দিন নিজের দফতরের কাজ দেখবেন৷ বাকি ৩ দিন নিজেদের এলাকায় থাকবেন।

এদিকে সাঁওতালি ভাষার বিশেষ লিপি অলচিকিকে আরও গুরুত্ব দিতে এবং রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও এই হরফ ব্যবহার করার জন্য আলাদা করে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আজকের রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এবিষয়ে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বৈঠকে জানিয়েছেন, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১৪৫টি স্কুলে প্রতিটি স্কুলে দু’জন করে সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এবং খবুই তাঁরাতাড়ি এই শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে শিক্ষা দফতরের তত্ত্বাবধানে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই বহু দিন আগের প্রস্তাবিত এই বিষয়টি সাফল্য পেল। আর এই সাফল্যে সাঁওতালি ভাষাভাষির ছাত্রছাত্রীরা বেশ সুবিধাও পাবেন । তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলেছে, এবারের লোকসভায় ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যের শাসক দল । তাই সেখানকার স্থানীয় মানুষের ভাষার অধিকারকে স্বীকৃতির মধ্যে দিয়ে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে সেখানকার মানুষের মধ্যে ঢুকতে চাইছে শাসকদল । অর্থাৎ শাসকদল বুঝতে পেরেছে, সেসব অঞ্চলে তাঁদের ভিট নরবড়ে হয়ে গিয়েছে, তাই তাঁরা দীর্ঘদিনের একটা দাবিকে পূরণ করে ফের মানুষের মনে জায়গা নিতে চাইছে ।

উল্লেখ্য, বহু বছর ধরেই রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অলচিকি হরফে লেখাপড়া চালু করার দাবি জানিয়ে আসছে অল ইন্ডিয়া সাঁওতালি এডুকেশন কাউন্সিল। তথ্য মারফত জানা গিয়েছে, এখন বিশ্বের সাঁওতালভাষী মানুষের মধ্যে ভারতে রয়েছেন প্রায় ৬৫ লক্ষ জন, বাংলাদেশে ২ লক্ষ ২৫ হাজার জন এবং নেপালে ৫০ হাজার জন। বেশির ভাগ সাঁওতালি ভাষাভাষী মানুষ ভারতের ঝাড়খণ্ড, আসাম, বিহার, ওড়িশা, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গে বাস করে। আর এই সাঁওতালি ভাষার নিজস্ব লিপির নামই অলচিকি।