তৃণমূলের সেকেন্ড ম্যানের মত জনসংযোগে নিরাপত্তা চান না শুভেন্দু!

72

লোকসভায় তৃণমূলের ভরাডুবির পর চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছিল দলের অন্দরেই। তারপরেই পর্যবেক্ষক স্তরে বড়সড় রদবদল করেন তৃনমূল সুপ্রিমো এবং অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্ব অনেকখানিই লঘু করে দেওয়া হয়। কারন, যে সব জেলা বা লোকসভা কেন্দ্রে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব অভিষেকের উপরে ছিল, সেই সব জেলা বা আসনগুলির অধিকাংশেই তৃণমূলের ফল অত্যন্ত খারাপ করতে দেখা গিয়েছে। তারপরই জঙ্গলমহল, মুর্শিদাবাদ এবং দুই দিনাজপুরের দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দায়িত্ব পাবার পর এই প্রথম সারাসরি অভিষেককে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী।

উল্লেখ্য, রবিবার বিষ্ণুপুরের যদুভট্ট মঞ্চে লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন শুভেন্দু। বাঁকুড়া জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র। বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর। প্রতিটি কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি করে বিধানসভা। বাঁকুড়ার সাতটিতেই ভোটপ্রাপ্তিতে বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। বিষ্ণুপুরের ৬টিতে একই দশা। সেখানে শুধু খণ্ডঘোষে তৃণমূল এগিয়ে, যে কেন্দ্র পূর্ব বর্ধমান জেলায় পড়ে। শুভেন্দু এদিন বলেন,” আমি যখন জেলায় আসবো তখন কাউকে রাস্তার পাশে দড়ি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। মানুষকে কেউ আটকাবেন না।পুলিশকে আমি নিষেধ করে দিচ্ছি এসব কাজ চলবে না। তিন মাসের মধ্যে যদি ভুলত্রুটি শুধরে দলকে তুলে ধরতে না পারি তখন আপনারা আমাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। মূলত, শুভেন্দুর এই বক্তৃতার পরেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠে যায় নিমেষের মধ্যেই। তাঁরা জানান, তাহলে কি শুভেন্দু অভিষেকের নিরাপত্তার নামে বাড়াবাড়ি কেই দায়ী করলেন? কারণ অভিষেক যাতায়াত করার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই পথে নিয়ন্ত্রণ করত পুলিশ। বহু ক্ষেত্রে কিছু রাস্তা বন্ধ হতো? অর্থাৎ তৃণমূলের যুবরাজ যেখানে যান অনেক আগে থেকেই সেখানে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়, তার কনভয়ে থাকে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। এমনকি রাস্তার দুধারে ব্যারিকেড করে সরিয়ে দেওয়া হয় সাধারন মানুষকে। নিরাপত্তার খাতিরে তার সঙ্গে থাকে জ্যামারও। এমনকি হরিস মুখাজ্জি রোডে বাড়ির ( যদিও এই বাড়িটি তার নয়, কারন তিনি পিসির বাড়িতে আশ্রিত ) সামনে দুটি পিকেট রয়েছে কলকাতা পুলিশের। এরপরেও তিনি যখন আমতলায় তিনি তার অফিসে বসেন, আমতলার মোড় থেকে লোকনাথ মন্দির মোড় পর্যন্ত বাইরপুর রোড কার্যত দুর্গর চেহারা নেয়, তাই রাজনৈতিক মহল  মনে করছে শুভেন্দু সেই দিকটাই কটাক্ষ করেছেন।

এদিকে বৈঠক থেকে দলকে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দু। কর্মীদের বলে গিয়েছেন, আগামী বছর পুরভোট ও তার পরে বিধানসভা ভোট। এর মধ্যেই সংগঠনকে ঠিক করে নিতে হবে। লোকসভা ভোটে জেলায় তৃণমূলের হারের জন্য ধর্মীয় মেরুকরণ ও সিপিএমের ভোট বিজেপিতে চলে যাওয়াকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “গোটা রাজ্যে আমাদের ভোট বেড়েছে। লোকসভায় ফলাফলের নিরিখেও রাজ্যে ১৬৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে আমরা জয়ী হয়েছি। রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে গেলে এই সংখ্যা যথেষ্ট। তাই লোকসভা ভোটের ফলাফলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।”