করোনায় আক্রান্ত গৃহবধূ তবুও পরিবারের মানুষ বলছেন, ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রান্না করবে কে?

81

কি আজব ঘটনা? প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়লে পুরসভার কর্মীদের মতন আপনিও এই কথাটি বলতে বাধ্য হবেন। অর্থাৎ রিষড়া পুরসভা এলাকায় বাড়ির চারজনেরই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তার মধ্যে তিনজনের লক্ষণ না থাকলেও গৃহবধূর উপসর্গ ছিল। তাই পুরসভার কর্মীরা নিয়ম মেনেই ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভরতি করার জন্য তাঁদের বাড়ি গিয়েছিলেন। আর ঠিক তখনই ওই গৃহবধূর স্বামীর করজোড়ে অনুরোধ, ‘প্লিজ, ওঁকে নিয়ে যাবেন না। আপনারা তো একজনকে নিয়ে যেতে চান। আমার স্ত্রীর বদলে অন্য কাউকে হাসপাতালে পাঠাচ্ছি। ‘ও চলে গেলে বাড়িতে রান্না হবে না যে! ব্যাস তখনই বিষম খাবার জোগাড় পুরসভার কর্মীদের মুখে। তাঁদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে বিস্ময়ের চিত্র।

এরপর খানিকটা বিস্ময় কাটিয়ে উঠে গৃহস্থের বাড়িতে পুরকর্মীরা এনিয়ে বহুক্ষণ বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু গৃহবধূর বিকল্প হিসেবে কে কে হাসপাতলে যেতে প্রস্তুত, তাঁদের নাম একে একে বলে যেতে থাকেন সেই পরিবার। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, গৃহবধূকে ছেড়ে দিন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাকে পছন্দ বেছে নিন। এরপরেই হুলুস্থুল বেধে যায়। গৃহবধূকে ঘরে আটকে রাখার চেষ্টাও চলে। শেষ পর্যন্ত পরিবারের কাছ থেকে একরকম ছিনিয়ে নিয়েই ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়। ঘটনার সাক্ষী পুরসভার করোনা বিষয়ক নোডাল অফিসার অসিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিষয়টা ভুলতে পারছি না। রান্না হবে না বলে করোনা আক্রান্ত স্ত্রী-কে হাসপাতালে পাঠাতে আপত্তির কথা কানে বাজছে। করোনা আক্রান্তের বাড়িতে থাকাই বিপজ্জনক। রান্না করবে কে, সেই ভাবনাই বোধহয় ওদের সমস্ত আতঙ্ক ভুলিয়ে দিয়েছিল।