সূর্যের কাছে গিয়ে যে অজানা তথ্যটি গোটা বিশ্ববাসীকে দিল নাসার পার্কার সোলার প্রোব

161

একদিকে যেমন মঙ্গল অভিযান ও চন্দ্রুভিযান নিয়ে ব্যস্ত বিশ্বের বিভিন্ন মহাকাশ কেন্দ্র ঠিক সেসময়ই নাসার মহাকাশযান পার্কার সোলার প্রোব সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে নিয়ে এল এক অজানা তথ্য। মূলত, ২০১৮-এর ১২ অগস্ট সৌর অভিযানে যায় নাসার মহাকাশযান পার্কার সোলার প্রোব। তা নিয়েই সম্প্রতি কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘নেচার’-এর চারটি গবেষণাপত্রে।

দেখা গিয়েছে, সূর্য থেকে বেরিয়ে এই সৌরমণ্ডলে পৃথিবী-সহ অন্য গ্রহগুলির দিকে ছুটে আসতে আসতে হঠাৎই ‘মতিভ্রম’ হয় সৌরবায়ু বা সোলার উইন্ডের। সেগুলি আবার উল্টোমুখে সূর্যের দিকেই ছুটে যায়। তারপর খামখেয়ালে ইলেকট্রন, প্রোটনের মতো খুব ছোট ছোট কণাদের নিয়ে সেকেন্ডে ৯০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি গতিবেগে সে আবার ছুটে আসতে শুরু করে অন্য গ্রহগুলোর দিকে। তখন তার তাপমাত্রা থাকে ১০ লক্ষ ডিগ্রি কেলভিন। তবে সৌরবায়ুর এই খামখেয়ালিপনা সূর্যের সর্বত্র একই রকমভাবে হয় না। কোথাও তা বেশি দেখা যায়, কোথাও বা কম।

উল্লেখ্য, সূর্যের মনের অন্দরে কী গোপন কথা লুকিয়ে রয়েছে, বিজ্ঞানীরা সেই রহস্য জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েক শতাব্দী ধরেই। কিন্তু সৌরবায়ুর এই খামখেয়ালিপনার কথা এর আগে জানা তো দূরের কথা, বিজ্ঞানীরা কখনও ভাবতেও পারেননি। মূলত, সূর্যের অত কাছে গিয়ে নাসার মহাকাশযান এটাও দেখল, নিজের কক্ষপথে যখন সূর্য ঘুরছে, তখন তার থেকে বেরিয়ে আসার সময় সৌরবায়ুও সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে। ওভাবে ঘুরতে ঘুরতেই সূর্য থেকে ছিটকে বেরিয়ে সৌরবায়ু ছুটে আসতে শুরু করে সৌরমণ্ডলের বিভিন্ন প্রান্তে, বিভিন্ন গ্রহ ও উপগ্রহে। তবে, সূর্যের কাছাকাছি এমন একটা এলাকা আছে, যেখানে কোনো ধুলোবালি নেই। যাকে বলা যায় একেবারেই ‘ডাস্ট-ফ্রি জোন’। এতদিন বিজ্ঞানীরা জানতেন, ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে মহাজাগতিক ধূলিকণা (কসমিক ডাস্ট)। এই প্রথম দেখা গেল, সূর্যের কাছাকাছি এমন জায়গাও রয়েছে, যেখানে টিঁকে থাকার সাহস পায় না মহাজাগতিক ধূলিকণারাও। সূর্যের তাপ তাদের জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেয়। তার ফলে, সূর্যের কাছাকাছি সেই এলাকা একেবারেই হয়ে পড়ে ধুলোকণাহীন। পার্কার সোলার প্রোব এও দেখেছে, বেরিয়ে আসার প্রাক মুহূর্তে সূর্যের সঙ্গে অনেক বেশি জোরে ঘুরে সৌরবায়ু। তার পর উল্লম্বভাবে বেরিয়ে পড়ে সৌরমণ্ডলের উদ্দেশে।