১ বছরে পা দিল পাবজি মোবাইল

132

কিছুদিন আগেই ২ বছরে পা দিয়েছিল পাবজি পিসি । আর এবার ১ বছরের পথ অতিক্রম করল পাবজি মোবাইল । অর্থাৎ আজকের দিনে এই গেমটি খেলতে শুরু করেছিলেন অনেকেই । মূলত, ব্যাটেল রয়েল নামক একটি জাপানিজ বই এবং মুভিই মূলত এই গেমটির অনুপ্রেরণা হিসেবেই কাজ করেছে। একটি আইল্যান্ডে ৪২ জন স্টুডেন্টকে নামিয়ে দেওয়া হয়, এবং বাধ্য করা হয় একে-অপরকে মারতে,যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষজন বেঁচে থাকে। ২০০০ সালে ব্যাটেল রয়েল মুভিটা রিলিজের পর থেকে মাত্র মানুষ সেই পরিস্থিতিতে থাকলে নিজে কি করত,সে সম্পর্কে বলতে থাকে।তৎকালীন সময়ে, পশ্চিমা বিশ্বে মুভিটি সেইরকমভাবে পরিচিতি না পাওয়ায়,কিছুদিন পরে এই মুভিটি নিয়ে আলোচনাও বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু তারও প্রায় ১ যুগ পর, ২০১২ সালে মুক্তি পায় “The Hunger Games”। এই মুভিটি আবার ১ যুগ আগের আগুনটিকে জ্বালিয়ে দেয়। তারপর থেকে সকলেই একটি ব্যাটেল রয়েল ভিডিও গেম চাচ্ছিল। এত চাহিদার পরেও কোনো কোম্পানি গেমটি তৈরী করছিল না।কিন্তু একজন মানুষ ছিল,যে কিনা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হয়ে ছিল যে একটি ব্যাটেল রয়েল ভিডিও গেম খেলার জন্য। সেই লোকটির নাম হলো ব্রান্ডেন প্লেয়ার আননোন গ্রিন। ব্রান্ডেন কোনো গেম ডিজাইনার ছিলেন না।তিনি ছিলেন একজন আইরিশ ফটোগ্রাফার ও ওয়েব ডিজাইনার।ভালবাসার টানে তিনি ছুটে গিয়েছিলেন ব্রাজিলে এবং সেখানে বিয়ে করেছিলেন।

দুই বছরের মাথায় তার ডিভোর্স হয়। সে আইল্যান্ডে ফিরে আসে এবং তখনই তার মাথায় আসে গেমটি তৈরী করার পরিকল্পনা। সে দক্ষিণ কোরিয়ার চ্যাং হ্যান কিম এর নজরে পড়েন,যে কিনা একজন কোরিয়ান গেম ডিজাইনার। সে কাজ করত BLUE HOLE এর হয়ে।তার নিমন্ত্রণ পেয়ে ব্রান্ডেন চলে যান সাউথ কোরিয়ায়। কিম BLUE HOLE এর পক্ষ থেকে কিম জানায় যে তারা একটি ব্যাটেল রয়েল গেম তৈরী করতে চায়। ব্রান্ডেন কে সম্পূর্ণ গেমের কনসেপ্টটি দেখায়। এবং এক মাসের মাথায় ব্রান্ডেনকে Blue Hole এর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে চাকুরি দেওয়া হয়।

ব্রান্ডেন,কিম এবং BLUE HOLE টিম খুব দ্রুত গেমটির কনসেপ্টকে বাস্তবে রুপ দিয়ে গেমটি তৈরী করে ফেলেন। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে শুধু একটি ম্যাপ ও সীমিত কিছু অস্ত্র নিয়ে গেমটি রিলিজ পায়। সময়ের সাথে সাথে গেমটিকে আপডেট করা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। গেমটি রিলিজের ৩দিনের মাথায় এটি ১১ মিলিয়ন ডলার আয় করে

উল্লেখ্যে ইতিমধ্যে গুগল প্লে স্টোরে ২০১৮ সালের সেরার অ্যাাপ গেম, সিনেমা, টিভি শো ও ইবুকের তালিকা প্রকাশ করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল। সেখানে ২০১৮ সালের সেরা গেমের পুরস্কার জিতে নিয়েছে পাবজি মোবাইল। চলতি বছর প্রথম গুগল প্লে স্টোর পুরস্কারে গ্রাহকের পছন্দের বিভাগ শুরু হয়েছে। সেরা গেমের সাথেই ২০১৮ সালের গ্রাহকের সব চেয়ে পছন্দের গেমের পুরস্কারও ছিনিয়ে নিয়েছে এই গেম।

ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে ‘প্লেয়ারস আননোনস ব্যাটলগ্রাউন্ডস’ (পাবজি)। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে পাবজি খেলোয়াড়ের সংখ্যা ৩০ লাখ। এর মধ্যে বেশির ভাগ খেলোয়াড় অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস থেকে এই গেম খেলেন। কয়েকদিন আগেই কোম্পানি জানিয়েছিল বিশ্বব্যাপী অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস মিলে মোট পাবজি খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১০ কোটি। চলতি বছর মার্চ মাসেই মোবাইলের জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল এই গেম।

মে মাসে এক কোটি খেলোয়াড় প্রতিদিন এই গেম খেলা শুরু করেন। সম্প্রতি কোম্পানির তরফ থেকে জানানো হয়েছে প্রতিদিন ১.৪ কোটি খেলোয়াড় প্রতিদিন পাবজি খেলেন।