জানেন কি? দুমুঠো অন্নের অভাবে প্রতি ১ মিনিটে ১১ জন করে মারা যাচ্ছেন

203

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের কবিতার এই লাইনটি আজ আক্ষরিক ভাবে ফুটে উঠেছে সামাজিক চিত্রের পেক্ষাপট হিসেবে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফ্যাম প্রকাশিত ‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস মাল্টিপ্লাস’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন মারফত জানা গিয়েছে, বিশ্বে প্রতি মিনিটে ১১ জন ক্ষুধার কারণে মারা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যাভাব ও ক্ষুধা তীব্রভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যাটি ছয় গুণ বেড়েছে। মূলত, খাদ্যাভাবে ভোগা দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ার পেছনে দায়ী হচ্ছে সহিংসতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন। তবে করোনা মহামারি এই দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আরও প্রভাব ফেলেছে। অর্থাৎ করোনা মহামারিতে যেখানে প্রতি মিনিটে ৭ জন মারা যাচ্ছে, সেখানে শুধু খাদ্যাভাবে মারা যাচ্ছে প্রায় ১১ জন।

অক্সফ্যামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে এই মুহূর্তে ১৫৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যাভাব ও খাদ্য নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি বেশি। এছাড়া নিজ দেশে সামরিক দ্বন্দ্বের কারণে মোট সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে রয়েছে। যদিও ইয়েমেন, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, আফগানিস্তান, দক্ষিণ সুদান, ভেনিজুয়েলায় ও সিরিয়ায় মহামারির আগে থেকেই খাদ্য সংকট ছিল।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, তার ফলে খাদ্য সংকট আরও বেড়েছে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনার কারণে মানুষ কাজ হারিয়েছে। খাদ্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে বৈশ্বিকভাবে খাবারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিগত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা এটি। অক্সফ্যামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের মানুষের পক্ষ থেকে একটিই বার্তা রয়েছে- সম্ভবত করোনার আগেই ক্ষুধা আমাদের মেরে ফেলবে।