সাক্ষাৎকারে কোন কথার ভিত্তিতে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা থেকে সরানো হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে? জানুন …

কথায় আছে, আইন যেমন আছে, আইনেরও সেরকম ফাঁকও আছে। ২০২২ সালে একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন, বিচারপতিরা কোনও ভাবেই বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলের সামনে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন না। কিন্তু কী এমন বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, সেই সাক্ষাৎকারে?

তিনি বলেছিলেন, ‘ মুড়িমুরকির মত দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে। এত দুর্নীতি হয়েছে যে কল্পনাও করতে পারিনি’। প্রসঙ্গত, ২০২২ সাল থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডের এক একটি রহস্য সামনে আসতে থাকে। আর তাতেই গড়াদের ভিতরে ঢুকতে থাকে রাজ্য সরকারের তাবর তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, যে তদন্তে সিবিআই এর ঢিলে ঢালা গতিতেও মাঝেমধ্যে বিরক্ত বোধ করছেন তিনি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে, বহু অযোগ্য প্রার্থী হারিয়েছেন চাকরি। এমনকি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। এমনকি মন্ত্রীর মেয়েও হারিয়েছে চাকরি। সাক্ষাৎকারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘যারা জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের চাকরি যাবে। ধরতে পারলেই চাকরি যাবে’। কোর্ট, আদালত, সুপ্রিম কোর্ট এসব জায়গায় সাধারণ মানুষ যায় স্বচ্ছ বিচারের আশায়, কিন্তু সেক্ষেত্রেও হয় উল্টো। কারণ তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়ে ভুল করেননি তাও তিনি জানিয়েছিলেন।

কারণ তাঁর কথায়, বিচারপতিরা কি করতে পারেন, কতদূর যেতে পারেন তা বেঙ্গালুরু প্রিন্সিপালে স্পষ্ট করা আছে। বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারপতিরও বাক স্বাধীনতা রয়েছে। রাজনীতি নিয়েও একাধিক উত্তর শোনা গিয়েছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে। তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনীতিতে আসার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত তিনি নেননি। তবে রাজনীতি সবসময় দলীয় রাজনীতি হবে, এমন কোনও কথা নেই। পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে রাজনীতির কথা বলা যেতে পারে’।

বর্তমানে এই সাক্ষাৎকার নিয়েই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। শুক্রবার তার সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যা নিয়ে উঠেছে ফের বিতর্ক।