মহাকাশ থেকে ঘুরে এলেন এই ৪ পর্যটক, কেমন ছিল তাদের এই সফর? জানুন… 

তিন দিনের মহাকাশ সফর শেষে পৃথিবীতে ফিরল স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল। এই প্রথম পৃথিবীর কক্ষপথ ঘুড়ে এসছেন স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগনের চারজন পর্যটক। এই ৪ জন পর্যটকের মধ্য ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী ইসাকম্যান, যিনি পুরো ট্যুরের খরচ দিয়েছেন। হ্যালে আর্কেনাক্স, যিনি ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরেছেন, বর্তমানে সেন্ট জুড শিশু গবেষণা হাসপাতালের ফিজিশিয়ান সহকারি, সিয়ান প্রক্টর, যিনি বিজ্ঞানী ও শিক্ষক আর ক্রিস সেমব্রোস্কি, যিনি একজন মহাকাশ ভক্ত। কিন্তু কেমন ছিল তাদের এই সফর?চলুন জেনে নেওয়া যাক…

মূলত,তিন দিনের সফরে এই চারজন মহাকাশের পর্যটক ১৩ ফুট ক্যাপসুলের মধ্যে ছিলেন। যা পৃথিবী থেকে ৩৫০ মাইল ওপরে, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকেও ১০০ মাইল ওপরে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এই প্রথম মহাকাশযানে করে মানুষ পৃথিবী থেকে এত উঁচুতে উঠেছে তাঁরা। এই সফরে মহাকাশে ছোটখাটো গবেষণাও করেছেন তারা। মহাকাশে তাদের শরীর কেমন আচরণ করে সেটি খতিয়ে দেখেছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন, কুপলা নামের জানালা দিয়ে দেখেছেন মহকাশের অনন্তকাল, শুনেছেন গানও। তবে মহাকাশে যাওয়ার পর প্রথম দুদিন তারা কোনো তথ্য দেননি। এমনিতেও মহাকাশে গেলে নভোচারী বা পর্যটকরা অস্বস্তিতে থাকেন লাইভে আসতে। নাসার গবেষণা বলছে, এ সময়টায় তাদের মোশন সিকনেস থাকে। আর মহাকাশে নির্বিঘ্নে ঘুমানো বেশ চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু স্পেস এক্সের ক্রু ড্রাগন ফ্লাইট কিছুটা ব্যতিক্রম।

উল্লেখ্য, স্পেসএক্সের এই মহাকাশযানটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় এর নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা নিয়ে কোনোকিছুই ভাবতে হয়নি তাদের। এই ক্যাপসুলটি ঘন্টায় ১৭ হাজার মাইল গতিবেগে চলেছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকেই ব্যবহার করেছে নিজের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য। এই প্রক্রিয়ায় স্পেস ক্রাফটের বাইরের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল সাড়ে তিন হাজার ফারেনহাইট। ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলটি এমনভাবেই তৈরি যেন ভেতরে তাপমাত্রা পৌঁছাতে না পারে। এই ক্যাপসুলের একটি শিল্ড আছে, যেটি তাপ থেকে ভেতরের অংশকে রক্ষা করে। অবতরণের সময় সমুদ্রপৃষ্ঠে যাওয়ায় এই ক্যাপসুলের তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল। এর আগে এই ক্যাপসুলের বিষয়ে জানিয়েছিলেন স্পেসএক্স প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। স্পেস ক্রাফট নিচে নামার আগে প্যারাশুট ছেড়ে দেয়। এরপর কয়েকটি রিকভারি শিপ এসে ক্যাপসুলটি জল সরিয়ে নিয়ে আসে। এ সফরে ঝুঁকি থাকলেও নাসার প্রাক্তন প্রধান জানিয়েছেন, ক্র ড্রাগন এখন পর্যন্ত মহাকাশে যাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ স্পেস ক্রাফট। এর আগে প্রশিক্ষিত নভোচারী নিয়ে দুটি মিশন শেষ করেছে এই যান। এবার নিরাপদে পর্যটকদের নিয়ে সফর শেষ করলো এই ক্রু ড্রাগন। তবে এর আগে ভার্জিন গ্যালাক্টিকের মহাকাশযানে করে মহাকাশে গেছেন রিচার্ড ব্র্যানসন। জেফ বেজস মহাকাশে গেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিনের তৈরি মহাকাশযানে করে।