জানেন কি? ৯’টি নয় মাত্র ৪’টি দেশের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে মারা যাবে ৫০০ কোটি মানুষ!

যদি প্রশ্ন ওঠে যে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র কী? তাহলে প্রথমেই যে অস্ত্রের নাম সবার মাথায় আসবে সেটা হলো পারমাণবিক বোমা। বর্তমানে বিশ্বে নয়টি দেশের কাছে মোট ১০ হাজার ৩০০ পারমাণবিক বোমা আছে। আর এই নয়টি দেশের মধ্যে ৪ টি দেশে যদি একের প্রতি অপরের সাথে পারমাণবিক যুদ্ধ হয় তাহলে কি ঘটবে জানেন? সম্প্রতি আমেরিকার রাটগার্স ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক ভয়াবহ তথ্য। যেখানে বলা হয়েছে, পারমাণবিক যুদ্ধের কারনে মারা যেতে পারে প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ। তবে শুধু প্রানহানিতে থেমে থাকবে না পারমানবিক হামলা হলে সর্বপ্রথম বায়ুমণ্ডলে সূর্যের আলো আটকে দেওয়া জন্য যে ছাইয়ের আস্তরণ পড়বে, তাতে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে।

উল্লেখ্য, ন্যাচার ফুড জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্য ছয়টি পারমাণবিক যুদ্ধের ফলাফল চিত্রায়িত করেছেন। তাতে দেখা যায়, শুধু আমেরিকার ও রাশিয়ার মধ্যে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ হলে পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ থেকে যে পরিমাণ ছাই-ধুলো বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে, তার ওপর নির্ভর করে এক আনুমানিক হিসাব নির্ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে তারা আমেরিকার জাতীয় বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণা কেন্দ্র সমর্থিত জলবায়ু পূর্বাভাসের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, তুলনামূলক স্বল্পমাত্রার সংঘাতও বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

এদিকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে পাঁচ বছরের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন সাত শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আর রাশিয়া-আমেরিকার মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন কমতে পারে অন্তত ৯০ শতাংশ। গবেষকরা বলেছেন, বর্তমানে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ফসল ব্যবহার করে অথবা খাদ্য অপচয় কমিয়ে যুদ্ধের তাৎক্ষণিক ক্ষতি কিছুটা কমানো সম্ভব। তবে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হলে এই সঞ্চয়ের পরিমাণ হবে ন্যূনতম। সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাতের উদ্বেগ বাড়তে থাকার মধ্যেই এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে । গত এপ্রিলে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, বিশ্বে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ‘গুরুতর ঝুঁকি’ রয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ও রাটগার্স ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিদ্যা বিভাগের জলবায়ু বিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যালান রোবক বলেছেন, এসব তথ্য আমাদের একটি কথাই বলে, পারমাণবিক যুদ্ধ হওয়া অবশ্যই আটকাতে হবে।