বাংলা থেকে মোদির মন্ত্রীসভায় আসতে পারেন মুকুল সহ ৯জন জয়ী প্রার্থী

191

লোকসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ের পর প্রধানন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ সন্ধ্যায় হতে যাওয়া শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে এরই মধ্যে সব ধরনের আয়োজন প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের সরকারে মন্ত্রী কে হবেন, এ নিয়ে বুধবার দিনভর টানাপড়েন চলেছে দিল্লিতে। তবে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান বলেই মনে করা হচ্ছে । এদিকে একটি সূত্র মারফত খবর মিলেছে, অন্তত চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় তথা মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতে যত কম সম্ভব বদল চান নরেন্দ্র মোদি।

বুধবার রাতে পাঁচ ঘণ্টা, দুপুরে তিন ঘণ্টা মন্ত্রিসভার তালিকা নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ। দুপুরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছেন, অসুস্থতার জন্য আর কোনও দায়িত্ব নিতে চান না। কিন্তু সন্ধ্যায় তার বাড়িতে যান মোদি। সূত্রের খবর, জেটলিকে অর্থ মন্ত্রণালয় অথবা দফতরহীন মন্ত্রী কমপক্ষে ক্যাবিনেট মর্যাদার পদ দিতে আগ্রহী মোদি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে খোদ অমিতের নাম ঘিরেও অনেক দিন ধরে জোর আলোচনা চলছে রাজধানীতে। আবার বিজেপিরই একটি অংশ বলছে, এখনও বিজেপি সভাপতি পদে অমিত শাহের উত্তরসূরি নিয়ে জট কাটেনি। সঙ্ঘেরও অনেকের মত, সভাপতি পদে থেকে অমিত শাহ সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে যে আক্রমণাত্মক যাত্রা শুরু করেছেন, মন্ত্রিসভায় চলে গেলে তা থেমে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোট সামলে পরে তাকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। অমিত নিজেও এখন মন্ত্রিসভায় যেতে আগ্রহী নন।

এদিকে বাংলা থেকে মোদির মন্ত্রীসভায় আসতে পারেন ৯ বিজয়ী প্রার্থী এবং একজন শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দসই হেভিওয়েট নেতা। অর্থাৎ তিনি মুকুল রায়। কারন রাজ্যে এ বার বিজেপির বিপুল জয়ের পুরস্কার পেতে পারেন মুকুল। তাঁকে দায়িত্ব দিলে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বই দেওয় হবে বলে রাজনৈতিক  মহলে বেশ জল্পনার সৃষ্টি হয়ে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্য মুকুলকে রাজ্যসভার সাংসদ করে আনতে হবে।

২. দিলীপ ঘোষঃ খড়গপুর থেকে মানস ভুঁইঞার মতো হেভিওয়েট সাংসদকে হারিয়ে সাংসদ হয়েছেন দিলীপ। কিন্তু রাজ্য বিজেপি সভাপতি মন্ত্রিত্বের ব্যাপারে নিজে জানিয়ে দিয়েছেন বাঙলার সংগঠনের কাজই আপাতত তিনি মন দিয়ে কাজ করতে চান।

৩. লকেট চট্টোপাধ্যায়ঃ তাঁরও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রথমেই পূর্ণমন্ত্রক না দিয়ে তাঁকে রাষ্ট্রমন্ত্রী বা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও মন্ত্রকের ভার দেওয়া হতে পারে বলে খবর।

৪. রাজু বিস্তা ও নিশীথ প্রামাণিকঃ পাহাড়ের ভাবাবেগ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে ভাগ্য খুলে যেতে পারে । উত্তরবঙ্গ থেকে নাম ভাসছে তৃণমূল ছেড়ে আসা নিশীথ প্রামাণিকেরও ।

৫. সুভাষ সরকার ও কুনার হেমব্রমঃ বাঁকুড়া থেকে জয়ী সুভাষ সরকার এবং ঝাড়গ্রামের সাংসদ খড়গপুরের অধ্যাপক কুনার হেমব্রমের নামও জল্পনায় রয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গলমহলের কথা মাথায় রেখে এই দু’জনের নাম বিবেচনায় রয়েছে বিজেপির।

৬. সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াঃ গতবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে দার্জিলিং থেকে জিতে পেয়েছিলেন ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব। এ বার দার্জিলিং থেকে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে দাঁড়ালেও তাঁর জয় আটকায়নি। ফলে তিনিও এবার পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।

৭. বাবুল সুপ্রিয়ঃ ২০১৪ সালে প্রথম বার জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন । তবে আগের বার ছিলেন ভারী শিল্পমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বার পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন তিনি ।

৮. দেবশ্রী চৌধুরীঃ বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি এবং তৃণমূলের কানাইয়ালাল আগরওয়ালের মতো তিন হেভিওয়েটকে হারানোর পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। কারন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব যে তাঁকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শপথ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা নিজেই জানিয়েছেন দেবশ্রী। ।