ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে নজিরবিহীন ভূমিকা ভারতের, হাসপাতাল গড়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে Indian Army

ভূমিকম্পের সর্বশেষ হিসেবে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। চারদিকে তাকালেই ধ্বংসস্তূপের পাহাড়। প্রায় শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাতারে-কাতারে মানুষ গৃহহীন হয়ে রয়েছেন। তুরস্কে গিয়ে এমনই দৃশ্যে চোখে ফুটে উঠেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৯৯ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিমের। মূলত, তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরেই পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল ভারত। সেই মতো এর আগেই ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দেশে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র পাঠিয়েছে ভারত। এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়াতে সেদেশে ছুটে গিয়েছেন। ভারত থেকে আট ঘন্টার বিমান যাত্রার পর সেনাবাহিনীর ৬০ প্যারা ফিল্ড হাসপাতালের ইউনিট দুটি পৃথক ব্যাচে গত মঙ্গলবার তুরস্কে নেমেছিল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ১৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশাল ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওই দলটি তুরস্কের ইস্কেন্দারুনের উদ্দেশ্যে যায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইস্কেন্দারুন থেকে সানডে এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, ৬০ প্যারা ফিল্ড হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল যদুবীর সিং বলেন, “আমরা একটি হাসপাতালের কাছাকাছি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি স্কুল বিল্ডিং দেখতে পাই। ওই বিল্ডিংয়ে তেমন কোনও ফাটল দেখিনি। সেখানেই একটি হাসপাতাল তৈরি করে ফেলতে আমাদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে। সন্ধ্যার মধ্যে আমরা রোগীদের দেখতে তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম।” উল্লেখ্য, ১৩ জন ডাক্তার, প্যারামেডিকস এবং অন্যান্য কর্মীদের দল ‘অপারেশন দোস্তের’ অংশ হিসেবে ইস্কেন্দারুনে রয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সহায়তা এবং চিকিত্সা দেওয়ার একটি মিশন হাতে নিয়েছে ভারত।

যুদ্ধকালীন প্রচেষ্টায় তুরস্কের ইসকেন্দারুনে ওই হাসপাতাল তৈরির তিন দিনের মধ্যে, রোগীরা আসতে শুরু করেছেন। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক নাগরিক পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রার ট্রমা এবং আঘাত নিয়ে চিকিত্সকদের দেখাচ্ছেন। ইসকেন্দারুনে দ্রুত ৩০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ভর্তি নেওয়াও শুরুর পথে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিং বলেন, “প্রথম দিনে, প্রায় ১০ জন রোগী ছিলেন। তবে পরের দুই দিনের মধ্যে সংখ্যাটা বাড়তে শুরু করে। এখন পর্যন্ত (শনিবার সকালে), আমরা প্রায় ৬০০ রোগীর চিকিৎসা করেছি।”

সেনাবাহিনীর ওই দলের একজন অফিসার বলেন, “তিন দিন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা পাঁচ বছরের একটি মেয়েকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। তারপরে ৪৮ বছর বয়সী একজন লোক ছিল যার পা ধ্বংসাবশেষের নীচে পিষ্ট হয়েছিল। আমাদের তার পা কেটে ফেলতে হয়েছিল।”