অবশেষে ৯০-এর ঘরে, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কম হওয়া নিয়ে স্বস্তির খবর

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যাপক দরপতন। সোমবার, ১৫ আগস্ট ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে ৪ ডলারের বেশি। চীনের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ধীরগতি বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা আবারও জাগিয়ে তোলায় তেলের এমন দরপতন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রয়টার্সের খবর অনুসারে, সোমবার সন্ধ্যায় ৬টায় অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ছিল আগের সেশনের তুলনায় ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। এদিন ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪ দশমিক ৭৫ ডলার কমে ৯৩ দশমিক ৪০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার ব্রেন্টের দাম কমেছিল অন্তত ১ দশমিক ৫ শতাংশ। আর এই দরপতনের দিকে লক্ষ্য রেখে বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন এভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমার ফলে খুব শীঘ্রই বাজারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমতে পারে ।

সোমবার দরপতন হয়েছে আমেরিকা ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটেরও (ডব্লিউটিআই)। এদিন ডব্লিউটিআইয়ের দাম ৪ দশমিক ৫২ ডলার বা ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৮৭ দশমিক ৫৭ ডলার। গত শুক্রবার এর দরপতন হয়েছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সঙ্গে কমছে তেলের বিক্রিও। গত বছরের আগস্টের তুলনায় চলতি মাসে ব্রেন্ট ক্রুডের ‘ওপেন ইন্টারেস্ট’ বা বিক্রি কমে গেছে প্রায় ২০ শতাংশ। ইউবিএসের তেল বিশ্লেষক জিওভানি স্টাউনোভো বলেন, ওপেন ইন্টারেস্ট এখনো কমছে। বাজারে অস্থিরতার কারণে কিছু ক্রেতা এতে হাত দিতে রাজি হচ্ছে না। তার মতে, সোমবার তেলের বাজারে ব্যাপক দরপতনের কারণ চীনের নিম্নমুখী অর্থনীতির তথ্য।

বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক চীনের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত জুলাই মাসে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি অপ্রত্যাশিতভাবে কমে গেছে। এর গতি ফিরিয়ে আনতে সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকারি তথ্য বলছে, চীনের দৈনিক পরিশোধিত তেলের পরিমাণ ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেলে নেমে গেছে, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন। এ অবস্থায় আইএনজি ব্যাংকের পূর্বাভাসে ২০২২ সালে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার চার শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ডাচ প্রতিষ্ঠানটির আগের পূর্বাভাসে চীনে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, কয়েকমাস আগে সিটি গ্রুপ জানিয়েছিল, বছরের শেষের দিকে দাম কমতে পারে। কারণ অপরিশোধিত তেলের দাম ৬৫ ডলার প্রতি ব্যারেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এমনই চলতে থাকে সেক্ষেত্রে পরের বছরের শেষ পর্যন্ত জ্বালানির দাম ৪৫ ডলার ব্যারেল হতে পারে।