সুমাত্রা দ্বীপে আবারও ভূমিকম্প, উস্কে দিচ্ছে ২০০৪ সালের ভয়াবহ সুনামির ধ্বংসলীলার স্মৃতি

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া সুনামির ভয়াবহতা ও ধ্বংসলীলার স্মৃতি আজও মনে রেখেছে মানুষ। ওই দিন ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ভূমিকম্পের প্রভাবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয় মানবসভ্যতাকে। তবে এই ভয়াবহ ঘটনার দু-দশক পূর্ণ হবার একবছর আগে আবারও কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ। রয়টার্স মারফত জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত ৯টা ৩১ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৩। মূলত, শক্তিশালী ভূকম্পনটি দুই থেকে ছয় সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সুমাত্রা দ্বীপে ঘটে যাওয়া এই ভূমিকম্পের প্রভাব মূল্যায়ন করছে তারা। এতে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাও খাতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বেংকুলু প্রদেশের মান্না শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫২ কিলোমিটার গভীরে। রাজধানী জাকার্তা থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মান্না শহরটি।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সমুদ্রগর্ভের ৩০ কিলোমিটার নীচে। মূলত, নয় দশমিক ১ থেকে নয় দশমিক ৩ শক্তির জোরালো ভূকম্পন হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভূকম্পন চলে প্রায় আট-দশ মিনিট ধরে । সারা ভূগোলক নাকি এক সেন্টিমিটার কেঁপে যায়। বিজ্ঞানীরা এই ভূমিকম্পের নাম দিয়েছেন সুমাত্রা-আন্দামান ভূমিকম্প। ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি বিশ্বের ১৪টি দেশে প্রায় দু’লাখ ত্রিশ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটায়। সুনামির জলোচ্ছ্বাস কোথাও কোথাও ৩০ মিটার অবধি উঁচু হয়ে বেলাভূমিতে আছড়ে পড়ে, বাড়িঘর ধ্বংস করে মানুষজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়৷ ভূমিকম্পের পর সুনামি আসতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগলেও, সমুদ্রতটের অধিকাংশ মানুষই সমূহ এবং আসন্ন বিপদটি উপলব্ধি করতে পারেননি, কেননা তখন ভারত মহাসাগরে কোনো ধরনের সুনামি সতর্কতা প্রণালী ছিল না। ২০০৪ সালের সুনামির পর সেই সতর্কতা প্রণালী স্থাপন করা হয়, ২০০৬ সাল থেকে এই প্রণালী সক্রিয় এবং ভারত মহাসাগরে ২০১২ সালের ভূমিকম্পগুলির পর এই সতর্কতা প্রণালী তার কার্যকরিতাও প্রমাণ করেছে।