৫৮ হাজারের বেশি নিয়োগ! বেআইনি ভাবে চাকরি বিক্রির সর্দারের ভূমিকায় ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য?

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এরপরেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে মানিককে নিয়ে। কখনও বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠি। কখনও বা ছেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার হদিশ পাওয়ার খবর। আর এবার আদালতে মানিকের সম্পর্কে আরও একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করল ইডি। তাদের দাবি, গোটা নিয়োগ দুর্নীতির মূল মাথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিকই। ১০ বছর পদে ছিলেন মানিক। ২০১১-র পর মানিকের আমলে ৫৮ হাজারের বেশি নিয়োগ হয়েছে। ঠিক কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা বোঝাতেই আদালতে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন ইডি-র আইনজীবী। তিনি জানান, জেনেশুনেই মানিক বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়ার দুর্নীতির প্রতি ধাপে যুক্ত ছিলেন বলেও দাবি করা হয়। দুর্নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর, নির্দেশও দিতেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও প্রচুর টাকা জমা রয়েছে।

আদালতে ইডি-র আরও জানায়, গত ২৭ জুলাই মানিকের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি ও ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ বাজেয়াপ্ত হয়েছে, সেটি পরীক্ষা করে মিলেছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় হয়েছে। টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির মাথা মানিকই। ইডি-র রিম্যান্ড লেটারে এই তথ্য উঠে এসেছে, যার একটি কপি হাতে পেয়েছে প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম এবিপি লাইভ। ঘুষের টাকা একাধিক প্রভাবশালীর কাছে পৌঁছে যায় বলেও দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। মানিকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপে যুক্ত থাকার সরাসরি প্রমাণ মিলেছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতভর মানিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। কিন্তু ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না মানিক। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে ইডি-র হাতিয়ার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তদন্তকারীদের নজরে মানিক ভট্টাচার্যর ফোন কলের ডিটেলস ও মেসেজও। ইডি সূত্রে দাবি, নিয়োগ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও বিভিন্ন জেলার নিয়োগকারীদের সঙ্গে মেসেজ আদানপ্রদান হয়েছে মানিকের। প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়েও টেক্সট। এই সমস্ত তথ্য প্রমাণ সামনে রেখেই আজও মানিককে জেরা করতে চায় ইডি।