সিঙ্গুর থেকে TATA-কে তাড়ানোর মন্তব্যে, মিথ্যে কথার ডক্টরেট পাওয়া উচিত মমতার!

বহুফসলি জমিতে কারখানা হবে। কর্মসংস্থান হবে। একলাখি গাড়ি পাবে রাজ্যবাসী। সঙ্গে আছে ব্রিটিশ আমলের কৃষক-বিরোধী জমি অধিগ্রহণ আইন আর বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের আত্মবিশ্বাস। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভরসায় দু-হাজার ছয়ের মে মাসে সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা তৈরির কথা ঘোষণা করে টাটা। তবে সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকরা জানিয়ে দিলেন, গায়ের জোরে বহুফসলি জমি অধিগ্রহণ তাঁরা মানবেন না। শুরু হল আন্দোলন। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে কত প্রতিবাদই তো হারিয়ে যায়। কিন্তু সিঙ্গুরের প্রতিবাদের মন বুঝতে দেরি করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাসিয়া হয়ে অনিচ্ছুক কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন মমতা। পরবর্তীতে এই আন্দোলনের জেরেই টাটা তাঁদের ন্যানো তৈরির কারখানা গুজরাতে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। বুদ্ধিজীবী মহলে এই অভিযোগ বারবার শোনা যায়। কিন্তু বুধবার শিলিগুড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন যে, তিনি টাটাকে তাড়াননি, সিপিএম তাড়িয়েছে । আর তাঁর এই দাবির পরই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে । রাজ্যের বাম ও কংগ্রেস নেতারা এই নিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে । বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের স্পষ্ট দাবি তিনি মিথ্যে কথা বলছেন।

এই প্রসঙ্গে এদিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে গিয়ে আজ দারুণ নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন । “মিথ্যে কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডক্টরেট পাওয়া উচিত । একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সকাল দুপুর সন্ধ্যা এত মিথ্যা কথা কী করে বলেন আমি জানি না । ওঁর উন্নয়নের জোয়ারে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে । রাজ্যের মানুষ এত কাজ এত চাকরি সুযোগ পাচ্ছেন যে তাঁদের ভিন রাজ্যে যেতে হচ্ছে না । তাতেই রাজ্যের মানুষ পাগলা হয়ে গিয়েছে । আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, টাটাদের বিরুদ্ধে তিনি ধরনায় বসেননি, বসেছিলেন বুদ্ধবাবুরা ।” অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছেন তা ঠিক নয় । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যে কথা বলছেন বলেই তিনি মনে করেন । তবে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “রাজ্য থেকে কারা টাটাকে তাড়িয়েছে তা দেশবাসী জানে । আজকে উনি নতুন করে ইতিহাস রচনা করতে চাইছেন ।”

প্রসঙ্গত আজ শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে সরকারি বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান ছিল । অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও একাধিক শিল্পপতি উপস্থিত ছিলেন । তাঁদেরই সামনে মমতা বলেন, “টাটাকে আমি তাড়াইনি । সিপিএম তাড়িয়েছে ।”