চীনের অগ্রাসন রুখতে ভারতের কেন সামরিক মিত্র হবার প্রস্তাব দিচ্ছে না আমেরিকাকে?

বিশ্বের দুটি বৃহত্তম জনবহুল দেশ চীন ও ভারত। ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিলেও ঐতিহ্যগতভাবে জোট নিরপেক্ষ নয়া দিল্লি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা বা সামরিক জোট গড়ে তোলেনি এই দুই দেশ। চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত অশোক কান্ত জানিয়েছেন, আসলে আমরা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক জোট বলে মনে করি। কিন্তু এটি কোনও সামরিক জোট নয়।

তিনি আরও দাবি করেছেন, ভারত ২০০ বছর উপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল। আমরা বিশ্বের একটি জনবহুল দেশ হিসেবে আবির্ভূত হই। এটি ছিল উদ্ভাবনী গণতন্ত্র, বহু সংস্কৃতি এবং উন্মুক্ত সমাজ। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ভারত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে অনুসারী হওয়া উচিত হবে না। ভারতে এটি উভয় দেশের জন্য কাজে আসবে। বর্তমানে এই নীতিকে ভারত কৌশলগত ও স্বার্থ হিসেবে উল্লেখ করে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধ বৃদ্ধির পরও এই নীতি বজায় দেখা হয়েছে। অশোক কান্ত আরও জানিয়েছেন, সমপর্যায়ে ভারত থাকবে না। আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থান নেব। কিছু বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি হতে পারি। তবে আমরা এটি সামরিক জোটে যোগ দেব না। এমন অবস্থাকে নিরপেক্ষতা হিসেবে হাজির করা যায় না। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় দিল্লি মস্কোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছিল। পাশাপাশি কান্ত আরও জানান, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভারত রাশিয়ার নিন্দা থেকে বিরত থেকেছে। কারণ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের কাছে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই নয়াদিল্লি নিজের সামরিক অংশীদারিত্বের বৈচিত্র আনার উপায় খুঁজে ছিল। এই প্রবণতা মার্কিন ভারত সম্পর্কের জন্য বড় সুযোগ ছিল। চীনের সঙ্গে ভারতের দুই হাজার ১০০ মাইল দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তৈরি করেছিল দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত। দুই দেশের সর্বশেষ সংঘাত হয় গত ডিসেম্বরে। ভারত ও চীন বিশ্বমঞ্চে একসঙ্গে কাজ করার মতো সুযোগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান বহুমুখী আন্তর্জাতিক বিশ্ব ব্যবস্থায় দেশ দুটি একে অপরের জন্য প্রয়োজনীয় হিসেবেও আবির্ভূত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নয় দেশের সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশন ব্লক এবং ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দুই দেশের অঘোষিত জোট ব্রিকস।