ফিরে দেখা ২০১৯: ‘পুলওয়ামা অ্যাটাক’ ভারতে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বিধ্বস্ত জঙ্গি হামলা

66

এবছরের শুরুতেই দেশের বুকে নেমে এসেছিল দুঃখের খবর, যা ঠান্ডা মাথায় করা হয়েছিল এবং গত দু’দশকে সশস্ত্র বাহিনীর উপর ঘটে যাওয়া হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বস্ত বলে মনে করা হয়েছিল ।অর্থাৎ  ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু শ্রীনগর জাতীয় মহাসড়কে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী একটি গাড়িকে ভারতের স্করপিও গাড়ি দ্বারা আত্মঘাতী বোমা হামলা করে সন্ত্রাসবাদীরা । সেই বোমা হামলায় অন্তত ৪০ জন সদস্য নিহত হন । এবং এই হামলার ঘটনা ঘটে পুলওয়ামা জেলার আওয়ান্তিপুরা এলাকায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় বাহিনীর ওপর এটাই সবচেয়ে বড় হামলা।

উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তরফে জানা গিয়েছিল,  সিআরপিএফের প্রায় ৭৮টি গাড়ি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহতদের শ্রীনগরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই হামলায় প্রায় ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। এদিকে সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির একজন মুখপাত্র বলেছিল, এটি আত্মঘাতী হামলা। আদিল আহমাদ এই হামলা চালান। তিনি ২০১৮ সালে সংগঠনটিতে যোগ দিয়েছিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এও জানিয়েছিল, ওই ৭৮টি গাড়িগুলোতে সিআরপিএফ-এর প্রায় আড়াই হাজার সদস্য ছিল। ওই ঘটনার প্রকাশিত ছবিতে দেখা, ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন ও মরদেহ মহাসড়কের ওপর পড়ে আছে। সূত্র বলেছে, গাড়িতে করে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে পুলিশ সূত্র জানিয়েছিল, গতকাল পুলওয়ামা জেলায় মহাসড়ক হয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল সিআরপিএফের একটি বহর। আওয়ান্তিপুরা এলাকায় ওই বহরের ওপর এই হামলা চালানো হয়। হামলার সময় উপস্থিত এক সিআরপিএফ সদস্য বলেছেন, আইইডির বিস্ফোরণে (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ওই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সিআরপিএফ-এর যে বাসটি লক্ষ্য করে এই হামরা চালানো হয়েছিল তাতে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৯ জন সদস্য ছিল। বিস্ফোরণের পর ওই সদস্যরা লুকানোর চেষ্টা করলে সন্ত্রাসী গুলি ছুড়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল।  

এদিকে এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘পুলওয়ামায় সিআরপিএফ সদস্যদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে তা ঘৃন্য। কাপুরষোচিত এই হামলার নিন্দা জ্ঞাপন করছি।’  এ ছাড়া এই হামলার ঘটনায় হতাতদের পরিবারের প্রতি শোক জানিয়েছেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। উল্লেখ্য, এই হামলার আগে কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় হামলা হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। ওই হামলায় ১৯ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিল।