মোদী ও মুর্মুর পদক্ষেপে ১৭৩ বছর পর আবারও ভারতে ফিরে আসতে পারে কোহিনূর!

খিলজি, তুঘলক, সৈয়দ, লোদি, মুঘল সাম্রাজ্যের পর ইরানের পার্সিয়া সাম্রাজ্য হয়ে কোহিনূর আসে শিখ সাম্রাজ্যের অধীনে। এরপর মহারাজা রঞ্জিত সিংহের মৃত্যুর পর ১৮৪৩ সালে পাঞ্জাবের রাজা হন তারই ৫ বছরের পুত্র দিলীপ সিংহ। এবং তিনি হন কোহিনূরের পরবর্তী উত্তরাধিকারী। তবে ১৮৪৯ সালে লাহোর সন্ধির দ্বারা অবুঝ দিলীপ সিংহের কাছ থেকে কোহিনূর ছিনিয়ে নেন ব্রিটিশরা। এরপর কোহিনূর পাড়ি দেয় লন্ডনে। এবং এলিজাবেথ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত কোহিনূর রয়েছে ব্রিটিশদের অধীনে, অর্থাৎ রপর থেকেই ব্রিটিশ রয়্যাল পরিবারের সম্পত্তির অংশ হয়ে দাঁড়ায় সেটি। তবে ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনাবসানের পর থেকে প্রশ্ন জাগছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অবর্তমানে কোহিনূর হীরের মালকিন কে হবে? ভারতে আবার ফিরে আসবে ব্রিটিশদের দ্বারা ছলচাতুরি করে নিয়ে যাওয়া কোহিনূর?

এনিয়ে এবার দাবি তুলল ওড়িশার এক সংষ্কৃতি বিষয়ক এক সংগঠন। তাদের দাবি কোহিনূর প্রভু জগন্নাথ দেবের সম্পত্তি। আর সেই কোহিনূর ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যাতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। সেই দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ওই সংগঠন। চিঠিতে বলা হয়েছে রাজা রঞ্জিত সিং আফগানিস্তানের সম্রাট নাদির শাহকে হারানোর পর নিজের ইচ্ছায় সেই কোহিনূর পুরীতে জগন্নাথ প্রভুকে দিয়েছিলেন। যদিও সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। রাজা রঞ্জিত সিংয়ের ছেলের কাছে থাকা অবস্থায় ব্রিটিশরা সেই কোহিনূর জোর করে নিয়ে চলে যায়। যা এখন রয়েছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে। কিন্তু তাঁর প্রয়াণে সেই হিরে চলে যাবে রাজা প্রিন্স চার্লসের কাছে। যেহেতু ব্রিটেনের রাজা এখন তিনি। তাঁর স্ত্রীয়ের কাছেই যাবে সেই কোহিনূর হিরে। কিম্তু আদপে এটা প্রভু জগন্নাথের সম্পত্তি। তাই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহায়তায় পুরীর মন্দিরে যেন ফেরানো হয়। শ্রী জগন্নাথ সেনা নামের ওই সংগঠনের তরফে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে। ওই সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, রাজা রঞ্জিত সিং কোহিনূর পুরীর মন্দিরে দান করছেন তার শংসাপত্র রয়েছে। যেটি আবার সই করেছে এক ব্রিটিশ সেনা আধিকারিক। এর আগে ২০১৬ সালে জনতা দলের সাংসদ ভূপিন্দর সিং রাজ্যসভায় একই দাবি করেন।

তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের মারফত জানা যাচ্ছে, রানির ছেলে প্রিন্স চার্লস ব্রিটেনের রাজা হলে, তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা, ডাচেস অফ কর্নওয়ালের হাতেই উঠবে কোহিনূর। যদিও ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদ, বৈবাহিক টানাপোড়েন নিয়ে প্রিন্স চার্লস বরাবরই সমালোচিত। ডায়ানার সঙ্গে বিয়ের আগে থেকে এবং বিয়ের পরও তিনি ক্যামিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারও দেন ডায়ানা, যা পরে স্বীকার করে নেন প্রিন্স চার্লস। ডায়ানার মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর পর ক্যামিলাকে বিয়ে করেন তিনি। আগাগোড়া ক্যামিলা অপছন্দ হলেও, ছেলের পছন্দকেই শেষমেশ রানি মেনে নেন। এরপর, চলতি বছরের শুরুতে রানি জানান, তাঁর মৃত্যুর পর প্রিন্স চার্লস রাজা হলে, কুইন কনসর্ট হবেন ক্যামিলা। সেই অনুযায়ী রানির রেখে যাওয়া কোহিনূর ক্যামিলার দখলেই যাওয়া নিশ্চিত।