২০০৪ সালের সুনামির ভয়াবহতা উস্কে দিল ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প!

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া সুনামির ভয়াবহতা ও ধ্বংসলীলার স্মৃতি আজও মনে রেখেছে মানুষ। ওই দিন ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ভূমিকম্পের প্রভাবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয় মানবসভ্যতাকে। তবে এই ভয়াবহ ঘটনার দু-দশক পূর্ণ হবার একবছর আগে আবারও কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া। গতকাল, ইন্দোনেশিয়ার জাভায় ৬.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। যা ভারতীয় সময় বেলা ৩টা ২৫ মিনিট।

ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা সংস্থা-ইউএসজিএস জানিয়েছে, উৎপত্তিস্থলে রিখটারস্কেলে ভূকিম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৬। ইউএসজিএসর কথায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ইন্দোনেশিয়া জাভা দ্বীপের উত্তর উপকূলীয় শহর তুবানের ৯৬ কিলোমিটার উত্তরে ভূ-পৃষ্ঠের ৫৯৪ কিলোমিটার গভীরে। তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিকম্পে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া ভূমিকম্পের পর কোনো সুনামি সতর্কতাও জারি করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সমুদ্রগর্ভের ৩০ কিলোমিটার নীচে। মূলত, নয় দশমিক ১ থেকে নয় দশমিক ৩ শক্তির জোরালো ভূকম্পন হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভূকম্পন চলে প্রায় আট-দশ মিনিট ধরে । সারা ভূগোলক নাকি এক সেন্টিমিটার কেঁপে যায়। বিজ্ঞানীরা এই ভূমিকম্পের নাম দিয়েছেন সুমাত্রা-আন্দামান ভূমিকম্প। ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি বিশ্বের ১৪টি দেশে প্রায় দু’লাখ ত্রিশ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটায়। সুনামির জলোচ্ছ্বাস কোথাও কোথাও ৩০ মিটার অবধি উঁচু হয়ে বেলাভূমিতে আছড়ে পড়ে, বাড়িঘর ধ্বংস করে মানুষজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়৷ ভূমিকম্পের পর সুনামি আসতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগলেও, সমুদ্রতটের অধিকাংশ মানুষই সমূহ এবং আসন্ন বিপদটি উপলব্ধি করতে পারেননি, কেননা তখন ভারত মহাসাগরে কোনো ধরনের সুনামি সতর্কতা প্রণালী ছিল না। ২০০৪ সালের সুনামির পর সেই সতর্কতা প্রণালী স্থাপন করা হয়, ২০০৬ সাল থেকে এই প্রণালী সক্রিয় এবং ভারত মহাসাগরে ২০১২ সালের ভূমিকম্পগুলির পর এই সতর্কতা প্রণালী তার কার্যকরিতাও প্রমাণ করেছে।