#বৃষ্টিভেজা শিলিগুড়ি

119

সন্দীপন পণ্ডিতঃ রাজনগর কোচবিহারে সাইকেল চালাতাম আমি আর এই শৈল পাদদেশের শহরে হরদম চাপি মোটরবাইক। মাঝে সময়ের কত ব্যবধান! তখনও রেনকোট ছিলনা আমার আর এখনও নেই! আসলে এই সময়ে, বৃষ্টিভেজার দিনরাতগুলি যে ভীষণ প্রিয় আমার। পাহাড় ছুঁয়ে এই শহরের মাথায় কালো বন্য মেঘ ধেয়ে আসে হরদম। অতএব বৃষ্টি আসে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি। মুষলধারার বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিপাত মাথায় নিয়ে শিলিগুড়ির এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে অনায়াসে ছুটতে পারি আমি। দেহমনে মাখতেই থাকি অবিরাম শীতল জলধারাপাত। সেইসব জলধারাপাত অনায়াসে ছুঁয়ে ফেলে আমার উদাসী মন। বৃষ্টিমাথায় একাকি আমি ছুঁয়ে ফেলি এই বিশ্ব চরাচর, সঙ্গোপন।

বৃষ্টিস্নাত আমার মনে জুড়ে চলতে থাকে কতই না ভাঙাগড়ার খেলা! ঘিরে ধরে স্মৃতিমেদুরতা। ভিজতে ভিজতে অতএব আমি পৌঁছে যাই পাহাড় শুরুর শুকনা। সেই পথে আমার সাথেই ভিজতে থাকে টয় ট্রেনের লৌহ পথ, গায়ে তার সবুজ মাখা। কখনও ছুঁয়ে ফেলি শালুগাড়া পেরিয়ে সেবকের চিরসবুজের আচ্ছাদনে ঢাকা মসৃণ কালো পিচরাস্তা। আহা! বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে পাহাড়ি রাস্তায় আপনি কি কখনও খেয়েছেন লেবু লবন মাখানো সুগন্ধি ভুট্টা পোড়া! এই জীবনে কি আর কখনও শেষ হয় এইসব মায়াবী সিক্ত পথচলা!

দিনযাপনের এই শহরের জাদুময় বৃষ্টিপাতে অতএব এবারো অবিরাম ভিজবো আমি। মন জুড়ে বেজে চলে তার দামামা। আর আমার সাথেই তো ভিজবেন মর্মর তেনজিং ও গোষ্টপাল এবং ভিজবে হিলকার্ট রোড, সবুজ মায়াবী মাঠ কাঞ্চনজঙ্ঘা।