দুই প্রাক্তনীর হাতে বধ লাল-হলুদের ৯-এ ৯ এর স্বপ্ন

কলকাতা ময়দানে অভিষেকটা সুখের হল না জনি আকোস্টার

ইস্টবেঙ্গল – ১ (কাশিম)

পিয়ারলেস – ২ (ক্রোমা, নরহরি)

মরশুমে প্রথমবারের জন্য হারল ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা ময়দানে অভিষেকটা সুখের হল না জনি আকোস্টার। কিন্তু এই হারের দায় কার? যে জবি জাস্টিনকে নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগেও বেশ মাতামাতি ছিল, আজ সেই জবির গোল মিস নিয়ে নিন্দায় মুখরিত সবাই। চোট থেকে ফিরে আসার পর প্রথম কয়েকটি ম্যাচ বেশ ভালো খেলেছিলেন কেরালার এই স্ট্রাইকার। কিন্তু পরবর্তী ম্যাচগুলিতে তার ফর্ম পড়তির দিকেই ছিল, আর আজকের ম্যাচে সেই পড়তি বড্ড চোখে পড়ে যায়। এছাড়া টিডি সুভাষের সাথে ক্লাবের মতানৈক্যের কারণে দলের হার এমনটা বললে যে ভুল হবেনা তা নয়। তবে তথ্যটি অর্ধসত্য, কারণ দলের সামগ্রিক খেলা ভালো হলেও দুর্দমনীয় পিয়ারলেসের কাছে থমকে গেল ইস্টবেঙ্গলের রথ। বলা ভালো, লাল-হলুদের দুই প্রাক্তনী বিশ্বজিত ভট্টাচার্যের স্ট্র্যাটেজি এবং ক্রোমার গোলেই পরাস্ত ইস্টবেঙ্গল।

যদিও শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গলেরই আক্রমণ ছিল, কিন্তু ৬ মিনিটে হঠাতই পিয়ারলেস আক্রমণে উঠে গোল করে। নবির পাস থেকে ক্রোমা অসাধারণ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। বিশ্বকাপার জনি আকোস্টা তার কাছে থাকলেও কিছুই করতে পারেননি। এরপর থেকে ইস্টবেঙ্গল একটানা আক্রমণ চালিয়ে যায়। একদিকে ছিল ম্যাচে ফেরার চাপ, অন্যদিকে মোহনবাগানের তুলনায় বেশি গোল করে লিগ টেবিলে এগিয়ে থাকা। কিন্তু আক্রমণ শানালেও একাধিক বল বক্সে থাকা খেলোয়াড়রা পাচ্ছিল না, নতুবা মিস করছিল। প্রথমার্ধের শেষ অবধি পিয়ারলেস এগিয়েই থাকে।

দ্বিতীয়ার্ধেও ফের ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ দেখা যায়। কিন্তু পিয়ারলেসও মাঝে মধ্যে আক্রমণে যাচ্ছিল। ক্রোমা চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় তার পরিবর্ত নরহরি শ্রেষ্টা এবং অ্যান্টনি উলফ বেশ কয়েকবার গোলমুখী আক্রমণ করছিল। ৭১ মিনিটে সমতায় ফেরে ইস্টবেঙ্গল। সুরাবুদ্দিন মল্লিকের ক্রস থেকে জবি হেড করে আকোস্টাকে দিলে তিনি লালরিনডিকাকে দেন, ডিকা বলটি বক্সে ফের ক্রস করলে কাশিম আইদারা গোল করেন। যখন সকলে ভেবে নিয়েছে ম্যাচ ইস্টবেঙ্গল বাঁচিয়ে ফেলেছে, সেইসময় তাদের এই আশায় জল ঢালল পিয়ারলেস। ৭৭ মিনিটে প্রতি আক্রমণে নুরুউদ্দিন পাস বাড়ান নরহরির দিকে, সেখান থেকে শট মেরে গোলরক্ষক রক্ষিত ডাগারকে পরাস্ত করেন নরহরি। এরপর অনেক আক্রমণ করলেও সমতায় ফেরানোর গোল পায়নি ইস্টবেঙ্গল। একেবারে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে আকোস্টার প্রয়াস বাঁচিয়ে দেন পিয়ারলেস গোলরক্ষক সন্দীপ।

মাঠের এমন কর্দমাক্ত অবস্থায় দুপক্ষের খেলোয়াড়রাই বেশ চোট পাচ্ছিলেন। দুবার চোট পেয়ে ক্রোমাকে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আশা করা যেতেই পারে, কলকাতা লিগের পর ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা মাঠটিকে ঠিক করতে এগিয়ে আসবেন।