কেকেআর এ নারিনকে পেতে মরিয়া ছিল গম্ভীর

প্রথম কয়েক বছরের আইপিএল এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের পারফর্মেন্স সেরকম ভালো ছিল না। কিন্তু গৌতম গম্ভীর অধিনায়ক হিসেবে যোগ দেওয়ার পরেই কলকাতার খেলা যেন একেবারে বদলে যায়। গম্ভীরের দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব ও প্রখর দুরদৃষ্টির ফলে কলকাতা নাইট রাইডার্স দুবার আইপিএল এর খেতাব জেতে।

কলকাতার সাফল্যের পিছনে যে কটি এক্স ফ্যাক্টর কাজ করেছে তার মধ্যে প্রধানতম ফ্যাক্টর হল সুনীল নারিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই মিস্ট্রি বোলার শুরুর দিকের মরশুমগুলিতে তার বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট চিন্তায় ফেলে দিত। কিন্তু আইসিসি তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাকে তার অ্যাকশন পাল্টাতে হয়, ফলে বোলিংয়ে সেই ঝাঁঝটি কিছুটা কমে গেলেও গত কিছু মরশুমে ওপেনিংয়ে দারুণ ব্যাটিং করছেন। গত ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ওপেনিংয়ে নেমে ৩৬ বলে ৭৫ রান করেন নারিন। এই সুনীল নারিনকে পেয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর স্বয়ং। এবং তাকে পেতে কর্তাদের সঙ্গে, এমনকি মালিক শাহরুখ খানকে পর্যন্ত অনুরোধ করেছিলেন।

২০১১ সালের আইপিএল এর নিলামের আগের দিন গৌতম গম্ভীরের কাছে সিইও ভেঙ্কি মাইসোর জানতে চান নিলামের ব্যাপারে কোনও ভাবনাচিন্তা আছে কিনা। তখন গম্ভীর বলেন সুনীল নারিনকে কিনতে। ভেঙ্কি মাইসোর স্বাভাবিকভাবেই কখনও নাম শোনেননি মাত্র ৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা নারিনের। তখন মাইসোর সংশয় প্রকাশ করলেন গম্ভীর বলেন, “শুধুমাত্র নামটি মনে রাখবেন। ভুলে যান কে এই খেলোয়াড়, শুধু নামটি মনে রাখুন।”

ভেঙ্কি মাইসোর যখন এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারলেন না তখন স্বয়ং শাহরুখ খান ফোন করেন গম্ভীরকে। সেই সময় গম্ভীর তার স্ত্রীর সাথে শপিং মলে কেনাকাটি করছিলেন। সেইসময় শাহরুখ গম্ভীরের কাছে জানতে চান তিনি তার সিদ্ধান্ত নিয়ে কতটা নিশ্চিত। তখন গম্ভীর জানতে চান কেকেআর এর নিলাম বাজেট কত ছিল, জানতে পারেন ১৩ কোটি মাত্র ছিল বাজেট। তখন গম্ভীর শাহরুখকে জানায়, “যদি তার দাম ১৩ কোটিও হয় তাহলেও নারিনকে যেন অতি অবশ্যই কেনা হয়।” গম্ভীরের এই কনফিডেন্স দেখে শাহরুখ নিশ্চিত হয় নারিনকে কেনার ব্যাপারে। আর ২০১১ সালের নিলামে ৪.৭১ কোটিতে কলকাতা ফ্র‍্যাঞ্চাইজিতে আসে সুনীল নারিন। আর তারপর বাকিটা ইতিহাস এবং এখনও তার প্রভাব যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে কলকাতা শিবিরে।

নারিনকে কেনার পর অধিনায়ক গম্ভীরের বক্তব্য ছিল এরকম, “আমার মনে হয় শাহরুখ অথবা ভেঙ্কি মাইসোর কেউই জানত না কে এই সুনীল নারিন। এমনকি নারিন নিজেও অবাক হয়েছিল তাকে বাছাই করার ব্যাপারে।”