পেরু যেন বিশ্বকাপের চক্রব্যুহের অভিমন্যু

ডেনমার্কের বিরুদ্ধে হারের পর আজ বিশ্বকাপের ফেভারিট ফ্রান্সের বিরুদ্ধে লড়াই করেও হার মানে তারা।

ফ্রান্স – ১ (এমবাপে)

পেরু – ০

মহাভারতে নিশ্চই পড়ে থাকবেন, কৌরবদের চক্রব্যুহের মধ্যে পড়ে অর্জুনপুত্র অভিমন্যুর জীবনযুদ্ধে হার মেনেছিলেন। ৩৬ বছর পর পেরুর আগমন যেন অস্তমিত হল দুর্ভাগ্যজনকভাবে। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে হারের পর আজ বিশ্বকাপের ফেভারিট ফ্রান্সের বিরুদ্ধে লড়াই করেও হার মানে তারা। যেমনটা অভিমন্যু লড়েছিল কৌরবপক্ষের বিরুদ্ধে।

প্রথমার্ধে ফ্রান্স যেন নিজেদের ফেভারিটের তকমা জারি রাখার পূর্ণ চেষ্টা করছিল। অন্যদিকে পেরু চেষ্টা করছিল একটা পয়েন্টের জন্য, যাতে বিশ্বকাপের সমুদ্রে অন্তত তারা ভাসমান অবস্থায় থাকে। ১৬ মিনিটে গ্রিজম্যানের চকিত শট পেরুর গোলরক্ষক গ্যালেসে তার হাটু দিয়ে বাঁচান। ৩৪ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। অলিভিয়ের জিরুর শট র‍্যামোসের পায়ে লেগে এমবাপের পায়ে এলে তিনি গোল করতে ভুল করেননি। ফ্রান্সের কনিষ্টতম ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে গোল করলেন কিলিয়ান এমবাপে। সমতায় ফেরার গোলের সন্ধানে এরপর পেরুর একটানা লড়াই চলতে থাকে। কিন্তু প্রথমার্ধে সেরকম কোনও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধে বেশিরভাগ সময়ই দেখতে পাই ফ্রান্সের দুর্ভেদ্য রক্ষণ বনাম পেরুর আক্রমণাত্মক লড়াই। ৫০ মিনিটে অ্যাকুইনোর দুরপাল্লার শট পোষ্টে লাগে। একের পর এক সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশারের অভাব ভুগেছে পেরু, যেমনটা অভিমন্যুর বিপক্ষে গিয়েছিল চক্রব্যুহ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় না জানাটা। ফ্রান্স দু একবার গোলের সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেনা তারা। পেরুর লড়াইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল গোটা পেরুবিয়ান গ্যালারি। রেফারির শেষ বাশি বাজার পর সমর্থক থেকে খেলোয়াড় – সকলেই মুখে ছিল হতাশার ছাপ আর চোখে ছিল জল। হয়ত চিত্রনাট্যটা ফুটবল দেবতা এমনটা নাইবা লিখতে পারতেন। এদিকে পরপর দুটি ম্যাচ জিতে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছাল ফ্রান্স।