মরণ-বাঁচণ লড়াইয়ে হার আর্জেন্টিনার!

ঠিক যখন মেসির গোল করে জেতানো দরকার তখনি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার এলএম১০।

69

একে মরণবাঁচন ম্যাচ তার উপর সামনে ক্রোয়েশিয়া! এমতাবস্থায় সবার চোখ ছিল এক জাদুকরের উপর।

তিনি লিওনেল মেসি!

বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।
প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ নষ্ট করার পর থেকেই চাপ বেড়েছিল তার উপর।

একদিকে তার দেশকে একা কাঁধে টানা তার উপর নিজেকে প্রমাণ করার জেদ। সবকিছু মিলিয়ে মাউন্ট এভারেস্টের শীতল চুড়া স্পর্শ করার মতো লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার সামনে। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলেন, ব্যর্থ হল তার দেশের সতির্থরাও,ব্যর্থ কোচ সাম্পাওলি-ও। সুন্দর দার্শনিক ফুটবলের পরিবর্তে দেখা গেলো ক্রোয়েশিয়ান দলের সাথে মাঠের জাদুকরের ঝামেলায় জড়াতে।

বিশ্বকাপ শুরুর আগের থেকেই কোচের অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিশেষজ্ঞ মহলে। ইকার্ডির মতো স্ট্রাইকারকে তিনি ২৩ জনের দলে রাখেননি। সেখান থেকেই সুত্রপাত সমালোচনার। এরপর গোলকিপার রোমেরোর চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পরে সাম্পাওলির। রোমেরোর স্ত্রী টুইটারে লেখেন তার স্বামি বিশ্বকাপ শুরুর আগে সুস্থ হয়ে যেতো, কিন্তু আর্জেন্টাইন ম্যানেজমেন্ট তার জন্যে আর অপেক্ষা করেনি। দলের প্রধান গোলকিপার হওয়ার সুযোগ মেলে কাবাল্লেরোর। কিন্তু তিনি তার প্রতিভার ছাপ ফেলতে ব্যর্থ। শুধু ব্যর্থই নয় বলা যেতে পারে তিনি একা হাতে আর্জেন্টিনা দলকে ডুবিয়ে দিলেন ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে।
এছাড়াও এইমুহূর্তের অন্যতম সেরা কমবয়সি খেলোয়াড় ডিবালা কে কোচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নামালো শেষের দিকে।

কোচের এই ভুল সিদ্ধান্ত গুলিই অত্যন্ত জটিল হয়ে দাঁড়াল আর্জেনটিনা দলের জন্যে।
কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই, প্ল্যান বি নেই, খেলার ধরণ ছন্নছাড়া, এরপরেও ক্রোয়েশিয়ার সাথে তাদের খেলা নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল আর্জেন্টিনার ভক্তেরা। কিন্তু ভক্তদের সব আশা ভরসা ভেঙে যায় খেলা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই।
২৩ মিনিটে রেবিকের গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। এরপর আর্জেন্টাইন আক্রমণ ক্রোয়শিয় রক্ষণভাগে হামলে পরে। তবে তা থেকে গোল আদায় করতে ব্যর্থ মেসি-মেজা-আগুয়েরোরা। বরং ৮০ মিনিটে মড্রিকের নেওয়া অসামান্য শট্ জড়িয়ে যায় জালে। দুই গোলের লিড নেওয়ার পরেও ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ চালিয়ে যায়। ফলস্বরুপ ৯০ মিনিটের শেষে অতিরিক্ত সময়ের ১ মিনিটের মাথায় রাকিতিক গোল করে কফিনের শেষ পেরেকটি পুতে দেয় আর্জেন্টাইন দলের বুকে।

দুই বড় দলের খেলা মানেই মনোরঞ্জন হবে খেলার ধরণ । কিন্তু সেখানে খেলার মান ছিল গড়পড়তা। মিস পাস, গোলের সুযোগ নষ্ট, বাজে ট্যাকেল সবই ছিল ভরপুর। শুধু অভাব ছিল জাদুকরের জাদুর,কিন্তু তা আজ ঢাকা পরে গেলো মড্রিক-রাকিটিক-পেরিসিকদের দার্শনিক ফুটবলে।

কাকতালীয় হলেও দেখা যায় মেসির মতো মড্রিকের ডাকনাম-ও এলএমএন ১০।
এবং ঠিক যখন মেসির গোল করে জেতানো দরকার তখনি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার এলএম১০।

২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ক্রোয়েশিয়া প্রায় একপ্রকার পরের রাউন্ডে চলে গেল। অপরদিকে আর্জেন্টিনা এবং আইসল্যান্ডের মধ্যে যেকোনো একটি দল পরের রাউন্ডে যেতে পারে।