মোদীর কাছের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও, কেন…নয়া রাজ্যপালের শপথগ্রহন অনুষ্ঠানে গেলেন না বিরোধী দলনেতা?

জগদীপ ধানকরের পর পূর্ণকালীন রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিলেন সি ভি আনন্দ বোস। বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজ্যপালের শপথবাক্য পাঠ করান। রাজভবনে এ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজ্য সরকার। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রণে পরিবারের সদস্যসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীও।  তবে আসনবিন্যাস নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘নোংরা রাজনীতির’ অভিযোগ তুলে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি ড. সুকান্ত মজুমদার। যদিও বিমান বসুসহ বেশ কয়েকজন বাম নেতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

শুভেন্দুর কথায়, “সাংবিধানিক প্রোটোকল মেনে কিছু পদাধিকারীকে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিরোধী দলনেতা তাঁদের অন্যতম । এদিনের অনুষ্ঠানে নির্বাচিত কিছু ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পদাধিকারী ছিলেন। আর ছিলেন দু’জন বিধায়ক ! তাঁরা হাউসের (বিধানসভার) ভিতর বিজেপি এবং হাউসের বাইরে তৃণমূল ! এমন দুই ব্যক্তির পাশে আমাকে বসার জায়গা দেওয়া হয়। তাছাড়া, রাজ্যসভায় তৃণমূলের দুই সাংসদ আছেন। আমার বসার আসন ছিল তাঁদেরও পিছনে। এতে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, আমি আমার পদমর্যাদার সঙ্গে কোনও আপস করব না। আমার আগে অবশ্য কয়েকজন আপস করেছিলেন । কিন্তু, জ্যোতি বসু বা সিদ্ধার্থশংকর রায়রা কোনও দিন আপস করেননি। আমিও তা করব না।”

 

উল্লেখ্য, এদিন শুভেন্দু যে দুই বিধায়কের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করেছেন, তাঁরা হলেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। এঁদের দু’জনের পাশেই তাঁর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি শুভেন্দুর। তাঁর প্রশ্ন, “২৯৪ জন বিধায়কের মধ্যে বেছে বেছে কেবলমাত্র এই দু’জনকেই কেন এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হল” ? শুভেন্দুর ব্যাখ্য়া, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকেই এমনটা করা হয়েছে ৷ এবং সবটাই করা হয়েছে রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলি হেলনে ! কারণ, এদিনের অনুষ্ঠান আয়োজনের যাবতীয় দায়িত্ব তথ্য-সংস্কৃতি দফতরেরই ছিল। তাছাড়া, এ রাজ্য়ে “একটা পোস্ট কার্ড ছাপাতে হলেও নবান্নের ১৪ তলা থেকে অনুমতি নিতে হয়” বলেও দাবি করেন শুভেন্দু।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস। একধারে তিনি যেমন প্রাক্তন আইএএস আধিকারিক তেমনি অন্যধারে সম্প্রতি মেঘালয় সরকারের উপদেষ্টাও তিনি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তাঁর পরিচয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ম্যান অফ আইডিয়া’ হিসাবে। যার বাংলা অর্থ হতে পারে ‘ভাবনা পুরুষ’। মোদীর এই নামকরণের অবশ্য কারণও রয়েছে। আনন্দের ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে কাজে এসেছে। বিশেষ করে দেশের সবার জন্য পাকা বাড়ির ভাবনাটিও মোদী নিয়েছিলেন তাঁর বুদ্ধি থেকেই।