ফের গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো,চাপে মুকুল

 

ফের গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো,এবার বীরভূমে।লোকসভা ভোটে কাজ করেও মেলেনি টাকা। এমনই অভিযোগ তুলে রবিবার দুপুরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন দলীয় মণ্ডল সভাপতি, কর্মী ও পাওনাদাররা। তাঁরা দাবি করেন, গত লোকসভা ভোটে দেওয়াল লিখন, মাইক খরচ, গাড়িভাড়া সহ বিভিন্ন খাতে তাঁরা বহু টাকা খরচ করেছেন। তাঁরা আশায় ছিলেন, ভোটপর্ব মিটতেই দলের তরফে সেই টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু, তিনমাস পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা তাঁরা পাননি। তাই টাকা পাওয়ার দাবিতে প্রার্থীর বাড়িতে এসে কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনায় জেলায় ফের গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। যদিও দুধকমার মণ্ডল বলেন, আমি কি ওদের কাছে টাকা ধার করেছিলাম, যে টাকা চাইতে এসেছে? ভোট হয়েছে। টাকা দিয়েছিল, খরচ হয়েছে। এখন আবার কী। সমস্ত হিসেব আমি পার্টিকে দিয়েছি এবং ক্লিনচিট সার্টিফিকেটও পেয়েছি।
এবার লোকসভা ভোটে বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন দুধকুমার মণ্ডল। তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়কে হারাতে নেতা-কর্মীরা জোর প্রচারে নেমেছিলেন। তাঁদেরই একাংশ এদিন প্রার্থীর ময়ূরেশ্বরের কোটাসুরে বাড়িতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিন রামপুরহাট মহকুমার মুরারই, নলহাটি, ও রামপুরহাটের ন’জন মণ্ডল সভাপতি ও মণ্ডল কমিটির সদস্য পাওনাদারদের সঙ্গে নিয়ে দুধকুমারের বাড়িতে আসেন। যার ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হয় প্রার্থীকে। রামপুরহাট-১ মণ্ডল সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল বলেন, দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর লক্ষ্যে বহু দেওয়াল লিখন, স্ট্রিট কর্নার সহ নানাভাবে প্রচার করা হয়েছিল। এছাড়া পার্টির নির্দেশে মণ্ডল সভাপতিদের সাতদিন ধরে চারচাকা গাড়িভাড়া করে গ্রামে গ্রামে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু, তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা আমরা পাইনি। শুধুমাত্র ভোটের দিন বুথ খরচের টাকা দেওয়া হয়েছিল। পাওনা টাকা চেয়ে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের নজরে আনা হয়েছিল। কিন্তু, কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জেলা সভাপতি বলেছিলেন, প্রার্থীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। সমস্ত খরচ প্রার্থী দেবেন। এবার সেজন্য রাজ্য ও জেলা ঘুরে প্রার্থীর কাছে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পাওনাদারদের সঙ্গে কেন এনেছিলেন? উত্তরে তিনি বলেন, পাওনাদাররা বলাবলি করছে মণ্ডল সভাপতিরা টাকা পেয়েছেন। আমাদের দিচ্ছেন না। এই ভুল ধারণা কাটাতে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে এসেছিলাম। এদিন প্রার্থী আমাদের বলেন, দলের রাজ্য ও জেলাস্তরের অব্যবস্থার জন্য আপনারা টাকা পাননি। যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকার পুরোটাই তিনি খরচ করেছেন বলে দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, টাকা আপনারা দেননি, তাই হিসেব চাওয়ার অধিকার আপনাদের নেই। এরপরই আমাদের নিরাশ হয়ে ফিরতে হল। তাঁর দাবি, ন’জন মণ্ডল সভাপতির পাওনা প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, পাওনা টাকা না পেলে ফের দলকে জানানো হবে।

 

এদিকে, এই ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, সেই সময় আমি জেলা সভাপতি ছিলাম না। ফলে, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, এভাবে বাড়িতে না গিয়ে দলীয় অফিসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করলে ভালো হতো। আমি ঘটনার নিন্দা করছি।