মিষ্টি খেয়ে দাঁত বের করে চলে গেল! দেখে নিন, গত ৫ বছরের বাণিজ্য সম্মেলনের হিসেব নিকেশ

২ বছর পর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হলেও গতকাল সে সন্মেলনের ছিল শেষ দিন। এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বহু ইতিবাচক সাফল্য এসেছে গত ২ দিনে। বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের বৈঠক হবে। স্বাক্ষরিত হবে একাধিক মউ কোন খাতে কত টাকা বিনিয়োগ, বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা হবে। তবে শুধু কলকাতাতে নয়, জেলাতেও সেই সাফল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শিল্পের স্বার্থে কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। প্রত্যেক মাসে বৈঠকে বসবে সেই কমিটি। মোট ১৩৭ টি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে এই সম্মেলনে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, গত ২ দিনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। গত ৫ বিজিবিএসে ১২ লক্ষ কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীর মক্তব্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কারণেই এই সাফল্য। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে রাজ্যে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ মানুষ যুক্ত। চর্মশিল্পে উত্তরপ্রদেশ থেকে শিল্পপতিরা এসেছেন। শুধুমাত্র এই সম্মেলন থেকে ৪০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান হতে চলেছে। কারন, শিল্পই আমাদের পরবর্তী গন্তব্য। কৃষির জন্য আমরা ক্রমাগত কাজ করে চলেছি। দেউচা-পাঁচামি অপেক্ষা করছে। জঙ্গলসুন্দরী প্রকল্প চালু হওয়ার পথে। অন্ডাল, বাগডোগরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা, তাঁরা জানাচ্ছেন এর আগের পাঁচটা সম্মেলনেই বা কত বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে? তার মধ্যে কতগুলো প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে? সেগুলি আগে তুলে ধরা হোক। কারন, ৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান মুখের কথা নয়। অন্যদিকে, সিপিআইএমের শতরূপ ঘোষের সাথে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম, তিনি এবারের সন্মেলন প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, পাত্র-পাত্রী দেখতে এসে কেউ মুখের ওপর পছন্দ হয়নি বলে না। বরং সব কটা মিষ্টি সাঁটিয়ে, পরে জানাবো বলে দাঁত বের করে চলে যায়। গত কয়েকবারে তো সেই অভিজ্ঞতাই হলো। এবারে কী হয় দেখা যাক…

উল্লেখ্য, একটি সূত্র মারফত আমরা গত পাঁচ বিজিবিএস সম্মেলনের হিসেব নিকেশ হাতে পেয়েছি। যা আমরা নিন্মরুপে তুলে ধরছি আপনাদের কাছে।

প্রথম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৫

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল- ২,৪৩,১০০ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ৯৮৩ কোটি টাকা

দ্বিতীয় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৬

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল- ২,৫০,২৫৩ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ৩,৪৩৩ কোটি টাকা

তৃতীয় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৭

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল- ২,৩৫,২৯০ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ২,৫৩৬ কোটি টাকা

চতুর্থ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৮

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল- ২,১৯,৯২৫ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ৬,৫৫০ কোটি টাকা

পঞ্চম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০১৯

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল- ২,৮৪,২৮৮ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ২,৩৬১ কোটি টাকা

ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০২২

বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে- ৩,৪২,৩৭৫ কোটি টাকা কিন্তু বাস্তবায়ন কত হবে তা এখন দেখার বিষয়…