দ্বিতীয় দফার ভোটে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রায়গঞ্জ আসনের সম্ভাব্য ফলাফল

60

দুদিন আগে বিক্ষিপ্ত অশান্তিকে সঙ্গে নিয়ে হয়ে গিয়েছে রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। অর্থাৎ গত ১৮ই এপ্রিল রাজ্যের দাজিলিং, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে দিনের শুরু থেকেই বেশ কয়েকটি অশান্তির খবর আসে কমিশনে। যদিও দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া দ্বিতীয় দফার ভোট মোটের উপর শান্তিপূর্ণ বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন বিশেষ পুলিস পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। এবং কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল এই তিন কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে ৭৬.০৭ শতাংশ। যেখানে জলপাইগুড়িতে ৭১.৩২ শতাংশ, দার্জিলিং ৭২.১৪ শতাংশ ও রায়গঞ্জে ৭৩.৩১ শতাংশ ।

তবে ভোটের শুরুতেই বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসতে শুরু করে। প্রথমেই ইভিএম বিভ্রাটের খবর মেলে নানা জায়গা থেকে। ইভিএম ও ভিভিপ্যাট বিভ্রাটের জেরে সকাল সকাল ভোট দিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন রায়গঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি, তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়াল। শুধু উত্তরদিনাজপুর নয় ইভিএম খারাপের খবর আসে শিলিগুড়ি, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতেও। একদিকে ইভিএম বিভ্রাটের খবর অন্যদিকে দ্বিতীয় দফার ভোটের শুরুতেই রণক্ষেত্র হেয় ওঠে চোপড়া। খবর পেয়ে হস্তক্ষেপ করে নির্বাচন কমিশন। ইসলামপুরে পাটাগোড়া এলাকায় বামপ্রার্থী মহম্মদ সেলিমের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আসে। এরজন্য তৃণমূলকেই দায়ী করে সিপিএম। এবং বেলা বাড়তে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসে জলপাইগুড়িতেও। জলপাইগুড়ির বালাপাড়ায় বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত এলাকা। আহত উভয়পক্ষের ১৬ জন। অভিযোগ, বালাপাড়া অঞ্চলে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি ঢুকে হুমকি দেয় তৃণমূল। ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা দান করে। এরপরই উভয়পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন এলাকার তৃণমূলের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার। অন্যদিকে ময়নাগুড়ির পেটকাটিতে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর নাক ফাটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ময়নাগুড়ির বিভিন্ন বুথে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ আসে। ভোটের শেষলগ্নে জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙায় ভোটচলাকালীন গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে ।

আর এই তিন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে যাবার পর, গতকাল এবং আজ আমাদের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে অধিকাংশ মানুষের সাথে কথা বলেছে, এবং কোন কেন্দ্রে শাসক দলের বিরুদ্ধে আবার কোন কেন্দ্রে বিরোধী দলের বিপক্ষে যে কথা উঠছে তা নির্দ্বিধায় পরখ করেছে আমাদের প্রতিনিধিরা । এছাড়াও ভোটের দিনে হুইসপারিং ক্যাম্পেনের মাধ্যমে এই তিন কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলের আভাস অনেকটাই ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তরবঙ্গের একাংশের মধ্যে। কারন বিক্ষিপ্ত আশান্তির মধ্যেই ভোটের দিন ভোটের লাইনে ঘুরে ঘুরে আমাদের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, এবং ভোট ফলাফল নিয়ে যে উপলব্ধি পেয়েছে তাঁরা, তাতে এই তিনটি কেন্দ্রে হাওয়ার পাল বইছে তিনটি শিবিরের দিকে! সেই শিবিরগুলি হল, তৃনমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি । তবে ভোটবাক্সে গনদেবতা কি ভোট দিয়েছে সেটা দেখা যাবে ২৩শে মে, আজ আমারা এই তিনটি কেন্দ্রের আভাস কোনদিকে তাই তুলে ধরলাম

জলপাইগুড়ি- এখানে ৭১.৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে, এবং ভোটবাক্সের গনদেবতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমাদের আভাস অনুযায়ী, এই কেন্দ্রে হাওয়ার পাল বইছে তৃণমূলের দিকে । উলেখ্য এখানে তৃনমূল প্রাথী হয়েছেন বিজয় চন্দ্র বর্মন, বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়, বাম প্রার্থী- ভগীরথ রায়, ও কংগ্রেস প্রার্থী-মণিকুমার দারনাল

দার্জিলিং – এখানে ৭২.১৪ শতাংশ ভোট পড়েছে, এবং ভোটবাক্সের গনদেবতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমাদের আভাস অনুযায়ী, এই কেন্দ্রে হাওয়ার পাল বইছে বিজেপির দিকে। কারন গোর্খার অনেকেই বিজেপিকে সমর্থন করেছেন। উল্লেখ্য এখানে তৃণমূল প্রার্থীর পদে- অমর সিং রাই, বিজেপি প্রার্থী- রাজু বিস্ত, বাম প্রার্থী- সমন পাঠক, কংগ্রেস প্রার্থী- শংকর মালাকার

রায়গঞ্জ- এখানে ৭৩.৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে, এবং ভোটবাক্সের গনদেবতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমাদের আভাস অনুযায়ী, এই কেন্দ্রে হাওয়ার পাল বইছে কংগ্রেসের দিকে। উল্লেখ্যে এখানে তৃণমূল প্রার্থীর পদে – কানহাইয়ালাল আগরওয়াল, বিজেপি প্রার্থী- দেবশ্রী চৌধুরী, বাম প্রার্থী- মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেস প্রার্থী- দীপা দাশমুন্সী।