প্লে-অফে পৌঁছে গেল নাইটবাহিনী

আইপিএলে ট্রফি জয়ের ক্ষেত্রে ফেভরিটদের তালিকায় হায়দরাবাদকে না রেখে উপায় নেই। নিয়মরক্ষার ম্যাচও দল যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে মনে হল দু’শোর গণ্ডি ঠিক পেরিয়ে যাবে। কিন্তু প্রসিদ্ধর সিদ্ধহস্তে বড় রান গড়ার থেকে আটকানো গেল হায়দরাবাদকে।

গত ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসনরা। তাই শনিবার ঘরের মাঠে তাঁরা জয়ে ফিরলে সমস্যায় পড়তে পারে কেকেআর। সেক্ষেত্রে দীনেশ কার্তিকদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচগুলোর দিকে। শনিবার দিনভর এসব সমীকরণই করছিলেন কেকেআর সমর্থকরা। তারপর রাজস্থান রয়্যালস আরসিবিকে হারাতেই অঙ্কটা সহজ হয়ে গেল। আর বাকিটা নিশ্চিত করে দিলেন ক্রিস লিন-প্রসিদ্ধরা। অন্য কারও মুখাপেক্ষী না থেকে বুক ফুলিয়ে সরাসরি প্লে-অফে পৌঁছে গেল নাইটবাহিনী।

ইতিমধ্যেই ফার্স্ট বয় হয়ে প্লে-অফে পৌঁছে গিয়েছে হায়দরাবাদ। তাই কেন উইলিয়ামসনদের কাছে এ ম্যাচ নেহাতই নিয়মরক্ষায় পরিণত হয়েছিল। কিন্তু উলটো দিকের দলটার কাহিনি ছিল আলাদা। শনিবারের ম্যাচের উপর চলতি আইপিএলে কেকেআরের ভবিষ্যৎ নির্ভর করেছিল অনেকখানি। সে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হল ক্রিস লিনের দৌলতে। নাইট দলের পুরনো সদস্য তিনি। কিন্তু এবারের আইপিএল যেন তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করল।

এবি ডিভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইল, জস বাটলারদের সঙ্গে বিদেশি রান-গেটারদের তালিকায় এবার উজ্জ্বল হল আরও একটি নাম। তিনি লিন। লিনের ব্যাটে রান এলে কেকেআর ঠিক ম্যাচ বের করে নেবে। সমর্থকদের বিশ্বাসের এই জায়গাটুকু অন্তত পাকা করে ফেলেছেন এই ওপেনার। তাঁর অনবদ্য ৫৫ রানের দৌলতে লক্ষ্যে পৌঁছানোর কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল। যে দলের বোলিং লাইন-আপকে এবারের সেরা বলে মনে করা হচ্ছে, সেই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন রবিন উথাপ্পাও। নাইট ব্যাটসম্যান ভালই জানতেন, এবার নয়তো নেভার। তাই ফিনিশটাও হল সেভাবেই।

তবে চলতি আইপিএলে ট্রফি জয়ের ক্ষেত্রে ফেভরিটদের তালিকায় হায়দরাবাদকে না রেখে উপায় নেই। নিয়মরক্ষার ম্যাচও দল যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে মনে হল দু’শোর গণ্ডি ঠিক পেরিয়ে যাবে। কিন্তু প্রসিদ্ধর সিদ্ধহস্তে বড় রান গড়ার থেকে আটকানো গেল হায়দরাবাদকে। চার-চারটি উইকেট ঝুলিতে ভরলেন তিনি।

গোটা কেকেআর শিবিরের তো বটেই, তবে বিশেষ করে একটি মানুষের প্লে-অফে পৌঁছানোর খিদেটা একটু বেশিই ছিল। তিনি অবশ্যই দীনেশ কার্তিক। গৌতম গম্ভীরের জুতোয় পা গলিয়েছিলেন। তাঁর কাঁধে গুরু দায়িত্ব দিয়েছিলেন শাহরুখ খান। সেই ভরসার সঠিক মূল্য দেওয়াটা যেমন জরুরি ছিল, তেমনই নিজেকে সফল অধিনায়ক হিসেবে প্রমাণ করার তাগিদটাও। আর এদিন দলকে জিতিয়ে কার্তিক বার্তা দিলেন, নয়া নাইট সেনাপতির উপর আস্থা রাখতেই পারেন কেকেআর-ভক্তরা। খেতাব জয়ের রাস্তা এখনও অনেক দূরে। কিন্তু যেখানে দিল্লি, আরসিবির মতো দলগুলি ছিটকে গিয়েছে, সেখানে এই প্রাপ্তিই বা কম কী।

আট ম্যাচ জিতে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত লিগ তালিকার তিন নম্বরে কিং খানের দল। কেকেআর, হায়দরাবাদের পাশাপাশি প্লে-অফ নিশ্চিত চেন্নাইয়েরও। এবার দেখার চতুর্থ দল হিসেবে কে শেষ চারে থেকে প্লে-অফের টিকিট পাকা করতে পারে