ওস্তাদের মার শেষ রাতে, দেখিয়ে দিল জার্মানি

এই ম্যাচটা জিততেই হত জার্মানিকে, নইলে বিশ্বকাপের সফর প্রায় শেষ বলেই ধরা হত। কিন্তু ক্রুসের অন্তিম মুহুর্তে গোল তাদের আশার তরীকে এখনো ভাসিয়ে রেখেছে।

জার্মানি – ২ (রেউস, ক্রুস)

সুইডেন – ১ (টোইভোনেন)

মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হারের পর হাহাকার পরে গেছিল সমর্থকমহলে – এ কেমন জার্মানি! ভুলে গেছিলেন ফুটবলে এমন অঘটন হয়েই থাকে, আশ্চর্যের কিছুই নেই। একবার হোচট খেয়েছে বলে কি আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না! না, এমনটা তো জোয়াকিম লো এর ছেলেরা নয়। সুইডেনের বিরুদ্ধে শুধু উঠেই দাঁড়ায়নি, দেখিয়ে দিয়েছে কেন আজও তাদের সমীহ করা উচিত। এই ম্যাচটা জিততেই হত জার্মানিকে, নইলে বিশ্বকাপের সফর প্রায় শেষ বলেই ধরা হত। কিন্তু ক্রুসের অন্তিম মুহুর্তে গোল তাদের আশার তরীকে এখনো ভাসিয়ে রেখেছে।

গোল করতেই হত জার্মানিকে, সেইকারণে জোয়াকিম লো শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ট্যাকটিক্স নিয়ে খেলিয়েছেন তার দলকে। অপরদিকে সুইডেনের দরকার ছিল একটি পয়েন্ট, তাই তারা রক্ষণশীল হয়েও মাঝে মধ্যে প্রতি আক্রমণে উঠে আসছিল। একের পর এক আক্রমণ করলেও সুইডেনের কড়া ডিফেন্ডিংয়ে কোনও লাভ হয়না। ১২ মিনিটে প্রতি আক্রমণে মার্কো বার্গ প্রায় একা উঠে এলে বক্সের মধ্যে জেরম বোয়াতেং পিছন থেকে ট্যাকল করেন, কিন্তু রেফারি পেনাল্টি দেননি। কিন্তু ৩২ মিনিটে সেই প্রতি আক্রমণে গোল করে এগিয়ে যায় সুইডেন। ক্রুসের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে ক্লায়েসন বল বাড়ান টোইভোনেনের উদ্দেশ্যে বাড়ালে টোইভোনেন আগুয়ান ন্যয়রের উপর দিয়ে চিপ মেরে গোলে ঢোকান। গোল খাওয়ার পর জার্মানির আক্রমণ যেন আরও বেড়ে যায়। ৩৯ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে নামা ইকে গুন্ডোগানের শট বাঁচান গোলরক্ষক রবিন ওলসেন, তারপর রিবাউন্ডে মুলারের কাছে বল গেলে কার্যত তা ছিনিয়ে নেন সুইডিশ গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে সুইডেনের মার্কো বার্গের হেডার দুর্দান্তভাবে প্রতিহত করেন ম্যানুয়েল ন্যয়র।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ যেন আরও বাড়ে জার্মানির। ৪৮ মিনিটে জার্মানিকে সমতায় ফেরান মার্কো রেউস। কিন্তু জয়সূচক গোল আর আসে না, সৌজন্যে দুর্দান্ত সুইডিশ ডিফেন্স ও জার্মানির স্ট্রাইকারদের সুযোগ নষ্ট। কিন্তু ৮২ মিনিটে অঘটন ঘটে জার্মান শিবিরে। ম্যাচে দুটি হলুদ কার্ড দেখে লাল কার্ড দেখেন জার্মানির জেরম বোয়াতেং, মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ১০ জনে হয়ে গেলেও জার্মানির আক্রমণ এতটুকুও কমেনি। ৮৮ মিনিটে মারিও গোমেজের হেডারকে অসাধারণভাবে বাঁচান ওলসেন। খেলা শেষের অতিরিক্ত সময়ে জুলিয়েন ব্রান্ডটের দুরপাল্লার শট পোস্টে লাগে। যখন মনে হচ্ছিল এবারের বিশ্বকাপে জার্মানির যাত্রা শেষ সেই সময়ে বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রিকিক পায় জার্মানি। টনি ক্রুস বলটি বাড়ান মার্কো রেউসকে, তিনি বলটি হোল্ড করলে ক্রুস সেইজায়গা থেকে শট মেরে গোলে ঢোকান, হতচকিত হয়ে যায় সুইডিশ ডিফেন্স। কোনওরকমে বেঁচে গেল জার্মানির বিশ্বজয়ের তরী।